মরক্কো কেমন দেশ

কাতার বিশ্বকাপ, মরক্কো, আফ্রিকা,
মরক্কোর মারাকেচ বিমানবন্দর। ছবি: রয়টার্স

কাতার বিশ্বকাপে সবাইকে চমকে দেওয়া দেশটির নাম মরক্কো। বিশ্বকাপের মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় এসেছে দেশটি। তারপর মরক্কো নিয়ে সবার আগ্রহ বেড়েছে। বিশেষ করে ফুটবল ভক্তদের কাছে পছন্দের দেশ হয়ে উঠেছে মরক্কো।

কিন্তু, মরক্কো কেমন দেশ, তা জেনে নিন-

ভৌগলিক অবস্থান

মরক্কো আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত এবং এটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগর দ্বারা বেষ্টিত। দেশটির সঙ্গে আলজেরিয়া এবং পশ্চিম সাহারার স্থল সীমান্ত আছে। এ দেশ দুটি যথাক্রমে মরক্কোর দক্ষিণ ও পূর্বে অবস্থিত। আর মরক্কোর আয়তন ক্যালিফোর্নিয়ার সমান।

উঁচু অ্যাটলাস পর্বতমালা মরক্কোকে সাহারা থেকে আলাদা করেছে। দেশটিতে বৃষ্টির পরিমাণ খুবই কম। এতটাই কম যে, মানুষের প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহেও যথেষ্ট নয়।

মানুষ ও সংস্কৃতি

মরক্কানরা বার্বার ও আরব জাতি থেকে এসেছে। দেশটির বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম। বার্বাররা শত শত বছর ধরে উত্তর আফ্রিকায় বসবাস করছেন। তাদের অনেকে পাহাড়ে বাস করে এবং এখনো বার্বার ভাষায় কথা বলে। যদিও বর্তমানে কাজের প্রয়োজনে তাদের অনেকে শহরের দিকে ছুটছেন।

মরক্কোর মানুষ চিনি দিয়ে তৈরি মিষ্টি পুদিনা চা পান করতে পছন্দ করে। তারা পরিবারের সদস্য ও অতিথিদের বরণ করে এই চা দিয়ে। শহর কিংবা গ্রাম সবখানেই এই রীতি প্রচলিত। দেশটির ৫৭ শতাংশ মানুষ ফেজ, কাসাব্লাঙ্কা ও মারাকেচের মতো শহরে বাস করে। মরক্কোর খুব সাধারণ দৃশ্য মসজিদ ও বাজার। এসব মসজিদে থাকে দৃষ্টিনন্দন লম্বা মিনার।

মরক্কোর শিশুদের ৭-১৫ বছর বয়স পর্যন্ত স্কুলে থাকতে হয়। যদিও অনেক শিশু স্কুলে যেতে পারে না। কারণ, তারা বাবা-মায়ের সঙ্গে কাজ করে। দেশটি নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে। অনেক মেয়েই কখনো শিক্ষার সুযোগ পায় না।

প্রকৃতি

এক সময় মরক্কো হাতি ও সিংহের আবাসস্থল ছিল। কিন্তু, এখন আর দেখা যায় না। দেশটিতে গেকো, সাপ এবং গিরগিটির মতো সরীসৃপ দেখা গেলেও বেশিরভাগ বড় স্তন্যপায়ী প্রাণী হারিয়ে গেছে। বর্তমানে দেশটিতে উট, ভেড়া, ছাগল, বারবেরি ম্যাকাক বানর বেশি দেখা যায়। এছাড়া মরুভূমিতে শিয়াল, হেজহগ এবং জেরবোয়া বাস করে। সমতল এলাকায় জলপাই গাছ এবং পাহাড়ি জঙ্গলে চিরহরিৎ ওক এবং দৈত্যাকার সিডার দেখা যায়।

সরকার ব্যবস্থা

মরোক্কোর রাষ্ট্রপ্রধান হলেন রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ এবং তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে দেশটি শাসন করছেন। প্রধানমন্ত্রী আব্বাস এল ফাসিকে নিয়োগ দিয়েছেন রাজা। রাজা সব সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত। মরক্কো একটি মুসলিম রাষ্ট্র এবং আইনী ব্যবস্থা ইসলামি আইনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মরক্কো জিব্রাল্টার প্রণালীর ওপারে অবস্থিত। ১৯১২ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত দেশটি ফরাসি এবং স্প্যানিশ অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। এখনো সিউটা এবং মেলিলা স্প্যানিশ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল।

আফ্রিকা মহাদেশে এখনো তিনটি দেশে রাজতন্ত্র প্রচলিত আছে। তাদের একটি মরক্কো এবং বাকি দুটো লেসোথো এবং সোয়াজিল্যান্ড।

Comments

The Daily Star  | English

Freedom fighter’s definition: Confusion, debate over ordinance

Liberation War adviser clarifies that Sheikh Mujib, Tajuddin, others in Mujibnagar govt are freedom fighters

13h ago