গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোসাদ প্রধানের বৈঠক
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন, হামাসের হাতে বন্দি থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য দুই পক্ষের আলোচনা নতুন করে শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান।
আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়া কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ বিন আবদুলরাহমান আল থানির সঙ্গে শুক্রবার গভীর রাতে আলোচনা করেন।
এ বিষয়ে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এই বৈঠকে গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধও বিরতি ও নতুন করে জিম্মি ও বন্দি বিনিময়ের বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু জানান, গাজায় ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন হামলার ফলে নভেম্বরে আংশিকভাবে জিম্মি মুক্তির চুক্তি সম্ভব হয়।
এই সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহুকে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোসাদ প্রধানের বৈঠকের বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব এড়িয়ে যান।
তবে তিনি নিশ্চিত করেন, আলোচনায় অংশ নেওয়া দলটিকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমি আলোচনায় অংশগ্রহণকারী (ইসরায়েলি) দলকে যে নির্দেশ দিয়েছি, তা হল, (হামাসের ওপর) চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। এটা ছাড়া আমাদের কিছুই থাকবে না।'
'কাতারের বিরুদ্ধে আমাদের গুরুতর অভিযোগ আছে। কিন্তু এ মুহূর্তে আমরা চাচ্ছি জিম্মিদের উদ্ধারের কাজটি শেষ করতে', যোগ করেন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই কাতারের সঙ্গে হামাস ও ইরানের ভালো সম্পর্ক নিয়ে অভিযোগ করে আসছে।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে স্থায়ীভাবে হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা বন্দি বিনিময়ের কোনো আলোচনায় অংশ নেব না। এই অবস্থানটি আবারও নিশ্চিত করা হল।'
অপরদিকে, গতকাল শনিবার গাজায় নিজেদের তিন জিম্মিকে 'ভুলবশত' হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
আজ রোববার জানা গেছে, এই তিন জিম্মি সাদা কাপড় উড়িয়ে আত্মসমর্পণ করতে চাইলেও তাদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্যরা। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান এই ঘটনার দায় নিয়েছেন।
এ ঘটনা প্রকাশে আসার পর নেতানিয়াহুর ওপর দ্রুত বাকি জিম্মিদের মুক্ত করার চাপ এসেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করে। জিম্মি হন প্রায় ২৪০ জন। এ ঘটনার পর থেকে গাজা উপত্যকায় নিরবচ্ছিন্ন স্থল ও বিমানহামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। মাঝে কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধে সাত দিন বিরতি থাকলেও এর মেয়াদ শেষে আরও তীব্র হয়েছে ইসরায়েলি হামলা। উত্তর গাজার পাশাপাশি দক্ষিণ গাজাতেও এখন চলছে সশস্ত্র অভিযান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এসব হামলায় প্রায় ১৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
Comments