আজ গাধা দিবস

রয়টার্স ফাইল ফটো

ছোটবেলা থেকে যে প্রাণীটির নাম আমাদের প্রায়ই শুনতে হয় সেটি হলো গাধা। কোনো ভুল করলেই গাধার সঙ্গে তুলনা করা যেন একটি রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে! যদিও আমরা অনেকে গাধা দেখিনি। তবুও কারো কারো উপাধি হয়ে দাঁড়ায় গাধা! তাও আবার ব্যাঙ্গাত্মক হিসেবে। তাই বলা যায়, রীতি মতো অপমান করতেই যেন বলা হয়, 'গাধার মতো কথা বলো না' কিংবা 'গাধার মতো কাজ করো না'।

আপনাকেও হয়তো একদিন কেউ গাধা বলেছিল, সেই কথাতে বেশ কষ্টও পেয়েছিলেন। কিন্তু আজ সেই কষ্টের কথা ভুলে যান। আজ যদি কেউ আপনাকে গাধার সঙ্গে তুলনা করেই ফেলে, তাহলে একটুও রাগ করবেন না। কারণ আজ বিশ্ব গাধা দিবস। প্রতি বছরের ৮ মে বিশ্ব গাধা দিবস উদযাপন করা হয়।

আচ্ছা, এই যে কোনো ভুল করলে, কখনো বোকামি করলে এই প্রাণীটির সঙ্গে তুলনা করা হয়, কিন্তু গাধা কী সে কথা জানে? আমরা গাধাকে যতটা বোকা ভাবি, গাধা কী আসলে ততটা বোকা? মনে হয় না, কারণ এই প্রাণীটি বছরের পর বছরের ধরে মরুভূমির মতো প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে এখনো পৃথিবীতে টিকে আছে। মানুষ তাদের দিয়ে পণ্য বহনের কাজ করাচ্ছে, গাধা কিন্তু সেই কাজ ঠিকঠাক করে যাচ্ছে। তাই স্পষ্টতই গাধা একটি পরিশ্রমী প্রাণি। অথচ মানুষ গাধাকে নিষ্ক্রিয় ভাবে, বোকা ভাবে! মানুষের এই ভাবনার পেছনে আদৌ কোনো যুক্তি আছে কি না তা জানা মুশকিল।

বরং গাধা এমন একটি প্রাণী যারা সারাদিনের কঠোর পরিশ্রমকে ভয় পায় না। গাধারা গাড়ি টানে, কলকারখানা চালায় ও মাইলের পর মাইল পথ হেঁটে মালামাল বহন করে। এমনকি অন্য প্রাণী হাল ছেড়ে দিলেও গাধা হাল ছাড়ে না। তারা মালিকের প্রতি অনুগত থাকে। এমন একটি প্রাণীকে সম্মান না করে অসম্মান করার কোনো যুক্তি নেই।

বিশ্ব গাধা দিবসের ধারণাটি এসেছিল রাজিক আর্কের মাথা থেকে। তিনি একজন বিজ্ঞানী এবং তার আগ্রহ মূলত মরুভূমির প্রাণীদের নিয়ে। প্রায় দশ বছর আগে তিনি লক্ষ্য করেন, সারা বিশ্বের মানুষ গাধাকে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করলেও এই প্রাণীটিকে কোনো সম্মান করে না। তাই গাধাদের সম্মান জানাতে ও তাদের পরিশ্রমের মূল্যায়নে একটি ফেসবুক পেজ চালু করেছিলেন তিনি। সেই পেজে তিনি এই প্রাণীটির বিভিন্ন প্রজাতির কথা লিখতেন। অবশেষে ২০১৮ সালে বিশ্ব গাধা দিবস উদযাপনের ধারণা আসে এবং তখন থেকে দিবসটি উদযাপন হয়ে আসছে।

আধুনিক গাধার দুটি পূর্বপুরুষ আছে। উভয়ই আফ্রিকান বন্য গাধার উপ-প্রজাতি এবং এগুলো হলো সোমালি বন্য গাধা ও নুবিয়ান বন্য গাধা। তারা মাইলের পর মাইল কার্গো টানতে সক্ষম। অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় বেশি সময় পরিশ্রম করতে পারে। তাদের চলার গতি ঘণ্টায় ৩১ মাইল পর্যন্ত হতে পারে। গাধার গড় আয়ু ৫০ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে হয়।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

3h ago