চট্টগ্রামে গান গেয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, এক মাস পর ভিডিও প্রকাশ
চট্টগ্রামে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার এক মাস পর ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, হত্যাকারীরা ওই যুবককে পেটানোর সময় গান গাইছিল।
২০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নিস্তেজ হয়ে পড়া এক যুবকের দুই হাত দুটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাকে ঘিরে একদল মানুষ গান গাইছে আর নাচছে। পিটিয়ে হত্যার সময় উচ্ছ্বসিত দেখা যায় তাদেরকে।
নিহতের নাম শাহাদাত হোসেন (২৪)। তিনি চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার নাদনা গ্রামে। শাহাদাত শহরের একটি ফলের দোকানে কাজ করতেন।
পুলিশ জানায় গত ১৪ আগস্ট চট্টগ্রামের ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকায় আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে শাহাদাতকে হত্যা করা হয়।
নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের এক মাসেরও বেশি সময় পর শনিবার ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনাটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে।
গত ১৪ আগস্ট রাতে বন্দর নগরীর প্রবর্তক এলাকায় শাহাদাতকে নিথর অবস্থায় পায় পুলিশ। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন শাহাদতের চাচা মো. হারুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। হত্যার উদ্দেশ্য বা পূর্বের কোনো বিরোধের কথা এজাহারে উল্লেখ করা হয়নি।
এজাহারে বলা হয়, শাহাদাত ১৩ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে তার স্ত্রীকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ফিরে আসার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। সন্ধ্যায় তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেলে স্ত্রী শারমিন আক্তার তাকে খুঁজতে থাকে। পরের দিন সন্ধ্যা নাগাদ হারুন ফেসবুকে একটি পোস্টে জানতে পারেন নগরীর প্রবর্তাক মোড়ে বদনা শাহ মিয়ার মাজারের কাছে শাহাদতের লাশ পড়ে আছে।
এক মাসেরও বেশি সময় পরে, ভিডিওটি ভাইরাল হলে, শাহাদতের পরিবার তাকে শনাক্ত করে এবং কীভাবে তাকে হত্যা করা হয় তা জানতে পারে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, 'ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর শাহাদতের স্ত্রী নিশ্চিত করেছেন ভিডিওর ওই ব্যক্তি তার স্বামী। আমরা ঘটনাস্থলটি শনাক্ত করেছি এবং এলাকা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি।'
ওসি বলেন, পুলিশ হত্যার পেছনের উদ্দেশ্য এবং দায়ীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।
Comments