লাগেজে পাওয়া খণ্ডিত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত

পাহাড় ধস
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

গত বৃহস্পতিবার রাতে পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকা থেকে একটি ট্রলি ব্যাগে এক ব্যক্তির মরদেহের আটটি খণ্ড উদ্ধার করা হয়।

আজ শনিবার নগরীর আকমল আলী ঘাটের খালপাড় এলাকা থেকে মরদেহের বাকি অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

নিহতের নাম মো. হাসান (৬০)। তিনি তিনি বাঁশখালীর কাতারিয়ার হাছন আলীর ছেলে। পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে ২৭ বছর বিদেশে নিরুদ্দেশ থাকার পর দেশে ফিরে আসেন কিছুদিন আগে। ফিরে নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেইট এলাকার জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় হাসানকে খুন করা হয়েছে। ওই বাসায় হাসানের ছোট ছেলে তার স্ত্রী-সন্তানসহ থাকতেন।

পিবিআই বলছে বাবা সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় সেই বিরোধে হাসানের স্ত্রী-সন্তানেরা তার লাশ টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দিয়ে তথ্যপ্রমাণ গায়েব করে দিতে চেয়েছে। এই ঘটনায় পিবিআইয়ের তদন্তের জালে আটকে গেছেন নিহতের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আনারকলি পলাতক আছেন বলে পিবিআই জানিয়েছে।

পিবিআই মেট্রোর পুলিশ পরিদর্শক ইলিয়াস হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মরদেহ উদ্ধারের পর পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। মরদেহের হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভার থেকে তার পরিচয় জানা গেছে। শুক্রবার সারারাত অভিযান চালিয়ে শনিবার সকাল ৮টার দিকে তার শরীরের বাকি অংশ মাথা ও ধর আকমল আলী ঘাট খাল পাড় এলাকায় পাওয়া গেছে।'

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে একটি ট্রাভেল লাগেজ থেকে ওই মরদেহের আটটি খণ্ড উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় পতেঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।

পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার একেএম মহিউদ্দিন সেলিম জানান, গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেইট এলাকার জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় হাসানকে খুন করা হয়েছে। ওই বাসায় হাসানের ছোট ছেলে তার স্ত্রী-সন্তানসহ থাকেন। খুন করে সেই বাসায় বসেই তার লাশ খণ্ড-বিখণ্ড করেন পরিবারের সদস্যরা।

পুলিশ কর্মকর্তা সেলিম বলেন 'বাঁশখালীতে হাসানের পৈতৃক কিছু সম্পদ আছে। স্ত্রী-সন্তানরা সেগুলো তাদের নামে লিখে দিতে চাপ দিতে থাকে হাসানের ওপর। কিন্তু হাসান সেগুলো দিবেন না বলে জানিয়ে দেন।'

'হত্যার দশদিন আগে চিকিৎসার নামে হাসানের স্ত্রী চট্টগ্রাম শহরে ছোট ছেলের বাসায় আসে। ঘটনার দিন বড় ছেলে মোস্তাফিজুরও সেই বাসায় যান। হাসানকেও ডেকে নেওয়া হয় সেখানে। রাতে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে স্ত্রী, দুই ছেলে এবং ছোট ছেলের স্ত্রী মিলে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করে। ঠান্ডা মাথায় লাশ কেটে টুকরো করে ট্রলিব্যাগে করে আট টুকরো ফেলা হয় পতেঙ্গা ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় খালে। মাথা এবং বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়েছে প্রমাণ মুছে ফেলার জন্য,' বলেন সেলিম।

পুলিশ পরিদর্শক ইলিয়াস বলেন 'আমরা সিসিটিভি ফুটেজে হত্যাকাণ্ডের পর খণ্ডিত লাশ নিয়ে যেতে দেখেছি এই বিষয়ে পুলিশ আরও তদন্ত করছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Fulfilling sky-high expectations Yunus govt’s key challenge

Says ICG report on completion of interim govt’s 100 days in office

5h ago