বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

হত্যা-গণপ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বুধবার ‘মার্চ ফর জাস্টিস’

স্টার ফাইল ছবি।

সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর হত্যা, গণপ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদে বুধবার পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণপ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবিতে বুধবার দুপুর ১২টায় দেশের সব আদালত চত্বরে, ক্যাম্পাসে ও রাজপথে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে।

শিক্ষক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী, পেশাজীবি, শ্রমজীবীসহ সব  নাগরিককে এ কর্মসূচি পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘোষিত নয় দফা হলো:

১। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাত্র-নাগরিক হত্যার দায় নিয়ে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

২। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার এবং সন্ত্রাসী কর্তৃক ছাত্র-নাগরিক হত্যার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে মন্ত্রীপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। ইন্টারনেট শাটডাউন করে দেশে ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন করায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে পদত্যাগ করতে হবে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শহীদ শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে ড্রাগ অ্যাডিক্ট বলে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে এবং আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে পদত্যাগ করতে হবে।

৩। ঢাকাসহ যত জায়গায় ছাত্র-নাগরিক শহীদ হয়েছে সেখানকার ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।

৪। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা হয়েছে, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টরদের পদত্যাগ করতে হবে।

৫। যে পুলিশ-বিজিবি-র‍্যাব ও সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করেছে, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ যেসব সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে এবং যেসব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিকদের ওপর গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে তাদের আটক করে হত্যা মামলা দায়ের করতে হবে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।

৬। দেশব্যাপী যেসব ছাত্র-নাগরিক শহীদ এবং আহত হয়েছে তাদের পরিবারকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৭। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে দ্রুততম সময়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ছাত্র সংসদ কার্যকর করতে হবে।

৮। অবিলম্বে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হল খুলে দিতে হবে। কারফিউ তুলে নিয়ে সারাদেশের সমস্ত ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, সোয়াট এবং আর্মি তুলে নিতে হবে।

৯। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না এই মর্মে অঙ্গীকার করতে হবে। ইতোমধ্যে গণগ্রেপ্তার ও পুলিশি হয়রানির শিকার সমন্বয়ক ও ছাত্র-নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে ও সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

12h ago