গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে: নাহিদ

নাহিদ ইসলাম | ফাইল ফটো

সংস্কারবিহীন নির্বাচন কোনো কাজে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

আজ শনিবার দুপুরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, 'আজকের আলোচনায় ৫ আগস্ট-পরবর্তী যে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের যে গণতন্ত্র একটা রিফর্ম প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। রিফর্ম কমিশনের প্রধানরা তাদের নিজ নিজ কমিশনের সংস্কারের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেছেন এবং রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দলীয় অবস্থান তুলে ধরেছেন।'

'এনপিসির সংস্কার বিষয়ে আমাদের যে অবস্থান, আমরা মনে করি, গণঅভ্যুত্থান পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে, সংস্কার ও বিচার... অন্যতম কমিটমেন্ট জনগণের কাছে। ফলে মৌলিক সংস্কারের ভিত্তি এই সরকারের সময়ে তৈরি করতে হবে এবং সব রাজনৈতিক দল মিলে যে একটা ঐকমত্য পোষণ করতে হবে যেটা জুলাই সনদের কথা বলা হচ্ছে, সেই জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে। আমরা জুলাই সনদের দ্রুত বাস্তবায়নের কথা বলেছি।'

তিনি বলেন, 'সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে আমাদের যে অবস্থান, গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় পার্লামেন্টের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার টেকসই হবে না... ইতিহাস থেকে এটাই আমরা দেখতে পাই। আমরা দলীয় অবস্থান থেকে আমাদের কথা বলেছি।'

'ইউএন সেক্রেটারি জেনারেল বলেছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো তারা যাতে নিজেরাই সমঝোতায় আসে, একটা ঐকমত্যে আসে। গণতন্ত্রের যে ট্রু সেন্স, সেটাকে মাথায় রেখে যাতে আমরা একসঙ্গে কাজ করি, একটা ইউনিটিতে আসতে পারি, সেটা তিনি তার জায়গা থেকে প্রত্যাশা করেছেন।'

নির্বাচন সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, 'আমরা মনে করি এবং আমরা এটাই বলেছি যে, নির্বাচন কিন্তু আমরা সংস্কারের একটা প্রক্রিয়া হিসেবে দেখি... সংস্কারের ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখি। কোনোরকম সংস্কার ছাড়া বা সংস্কারবিহীন নির্বাচন কোনো কাজে দেবে না।'

'অন্যসব রাজনৈতিক দলও এটার সঙ্গে একমত পোষণ করে। এখানে মতপার্থক্যগুলো হচ্ছে কোন সংস্কার কখন হবে, নির্বাচনের আগে কতটুকু হবে, নির্বাচনের পরে কতটুকু হবে—এটা নিয়ে। সেটা আমরা মনে করি যে, জুলাই সনদের মধ্যে সেটা বাস্তবায়ন হলে মতপার্থক্যগুলো কেটে যাবে এবং আমরা একটা ঐকমত্যে আসতে পারব।'

জাতিসংঘ ঢাকা অফিসের উদ্যোগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এই বৈঠকে সাতটি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। দলগুলো হলো—বিএনপি, জামায়াত, নাগরিক ঐক্য, সিপিবি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন ও এনসিপি।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন অংশ নেন।

এতে আরও ছিলেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার বিষয়ক কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, তথ্য উপদেষ্টা মাহবুব আলম, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মুনির হায়দারও সেখানে ছিলেন।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস, ইউএনএইটসিআরের আবাসিক প্রতিনিধি সুম্বুল রিজভী, আইনএলওর কান্ট্রি ডাইরেক্টের টুমো পুটিআইনেন, ডব্লিউএফপির আবাসিক প্রতিনিধি ডমিনিকো স্কেলপেনি, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, ডব্লিউএইচওর আবাসিক প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা, ইউএনওপিএসের আবাসিক প্রতিনিধি সুধীর মুরলীধরন, আইওএমর মিশন প্রধান ল্যানস বনেউ, ইউনেস্কোর প্রধান নির্বাহী পরিচালক ও ইউনিসেফের আবাসিক প্রতিনিধিও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Govt to expedite hiring of 40,000 for public sector

The government has decided to expedite the recruitment of 6,000 doctors, 30,000 assistant primary teachers, and 3,500 nurses to urgently address the rising number of vacancies in key public sector positions.

7h ago