বিচার ও সংস্কার পেছানোর রাজনীতি করবেন না: নাহিদ ইসলাম

ছবি: সংগৃহীত

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, 'আমাদের বলা হচ্ছে, আমরা নাকি নির্বাচন পেছানোর রাজনীতি করছি। খুব পরিষ্কারভাবে আপনাদের বলতে চাই, আপনারা বিচার ও সংস্কার পেছানোর রাজনীতি করবেন না। বিচার ও সংস্কারের প্রতি ঐকমত্য পোষণ করুন, নির্বাচন আমরা আপনাদের করে দিতে সহায়তা করব।'

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের নিয়ে ইফতারের আগে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ বলেন, 'জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা, সেই জন্য আমরা কারও ওপর নির্ভর করতে চাই না। সে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আমরা নিজেরাই মাঠে নেমে সেই দাবি বাস্তবায়ন করতে চাই।'

শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের বক্তব্যের সূত্র ধরে তিনি বলেন, 'সবার কথা থেকেই আমরা স্পষ্ট হয়েছি যে, আমাদের এই মুহূর্তের জরুরি দাবিটা কী—আমরা সবাই বিচার এবং সংস্কারের কথা বলছি।'

নাহিদ বলেন, '৫ আগস্ট পরবর্তী এই নতুন বাংলাদেশে এই যে সরকার গঠিত হয়েছে এবং সামনে যারা রাজনীতি করতে চাচ্ছে, তাদের সবার ন্যায্যতা হচ্ছে শহীদ পরিবার এবং এই আহত যোদ্ধারা; ফলে তাদের মনের আকাঙ্ক্ষা আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে।'

তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের খুনিদেরকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। যদি এর বিচার ছাড়াই আরেকটি সরকার চলে আসে, তাহলে কী নিশ্চয়তা আছে যে, আওয়ামী লীগকে আবার পুনর্বাসিত করা হবে না এই বাংলাদেশে? ফলে অবশ্যই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে, সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে—আওয়ামী লীগের ফয়সালা কী হবে? আমরা মনে করি, ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট রাজনীতির আর কোনো জায়গা হবে না।'

অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ বলেন, 'কত দিনের মধ্যে, কোন প্রক্রিয়ায় আমরা দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম দেখতে পারব এবং দৃশ্যমান সংস্কার আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব, সেটার সুস্পষ্ট রোডম্যাপ অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে।'

'বাংলাদেশে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তাকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়ে আহ্বান জানিয়ে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করেছিলাম। অন্যান্য উপদেষ্টাও আছেন, সেনাপ্রধান আছেন, তারা প্রত্যেকেই কিন্তু কমিটমেন্ট দিয়েছিলেন যে, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এবং বিচারের দায়িত্ব তারা নিচ্ছেন। ফলে এই কমিটমেন্ট থেকে কিন্তু তারা দূরে সরে যেতে পারবেন না। জনগণের সামনে কিন্তু তাদেরকে দাড়াতে হবে। আমরা কিন্তু কড়ায় গন্ডায় জবাবদিহিতা নেব যে, আমাদের বিচার কতটুকু আদায় হলো, আমাদের সংস্কার কতটুকু আদায় হলো?' যোগ করেন তিনি।

নাহিদ বলেন, 'রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনের জন্য এতই তাড়াহুড়া করে, ভোট চাইতে গেলে কিন্তু সেই জবাবদিহিতা তাদেরকে দিতে হবে। বাংলাদেশে যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমরা সেই ঐকমত্য ধরে রাখতে চাই। আমরা কেউই নির্বাচনের বিরুদ্ধে না। বরং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব বলে আমরা নিজেরাও একটা রাজনৈতিক দল গঠন করেছি। কিন্তু আমরা বলছি যে বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচন এবং নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি গণপরিষদ নির্বাচন। কারণ গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সংবিধান অকার্যকর হয়েছে, ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানকে একটি সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে একটি নতুন একটি সংবিধান এই জাতিকে আমরা উপহার দিয়ে যাব।'

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

4h ago