আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে, দাফন হয়েছে দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন

সালাহউদ্দিন আহমদ | ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে, দাফন হয়েছে দিল্লিতে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

আজ সোমবার দুপুরে কক্সবাজারের মুক্তিযোদ্ধা মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, '১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের মধ্য দিয়ে তৎকালীন শাসক মুসলিম লীগের চিরতরে কবর হয়ে গিয়েছিল। ভোটের মাধ্যমে এই ভূ-খণ্ডের মানুষ গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছিল। পশ্চিম পাকিস্তানি মুসলিম লীগারদের অপশাসনের বিরুদ্ধে গণরায়ের মধ্য দিয়ে সেই যে মুসলিম লীগের বিদায় হলো, এই ভূ-খণ্ডে মুসলিম লীগ আর কখনো মাথা উঠাতে পারেনি।'

তিনি বলেন, 'যারা পালাতে পারেনি—আওয়ামী লীগের খুচরা নেতারা, যারা এখনো বিভিন্ন জায়গায় বনে-বাদারে লুকিয়ে আছে, তাদের উদ্দেশে নসিয়ত হচ্ছে, যে নেতা তোমাদের ফেলে নিজের জ্ঞাতিগোষ্ঠীদের নিয়ে, সহায়-সম্পত্তি নিয়ে দিল্লি পলায়ন করেছে আকাশ পথে, সেই নেতার জন্য এখনো রাজনীতি করবে?'

গণতন্ত্র ও আওয়ামী লীগ পরস্পরবিরোধী শব্দ উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই দেশে আওয়ামী লীগের নামে আর রাজনীতি করা জায়েজ নাই। এই দেশের মানুষে আর এজাজত দেবে না। সুতরাং আওয়ামী লীগ ভুলে যান। আওয়ামী লীগ এখন একটি পতিত ইতিহাস। রাজনৈতিক অভিধানে একটি ঘৃণিত শব্দ।'

শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, 'দিল্লিতে বসে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি করবেন, সেই দিন ভুলে যান। দিল্লিতে বসে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করবেন ওই দিন আর নাই। দেখে যান, বাংলাদেশের নবজাগরিত মানুষ, যারা গণতন্ত্রকে বুকে ধারণ করে হাজার হাজার শহীদের বুকের রক্তের ওপর দিয়ে বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিস্টমুক্ত রাষ্ট্র করতে চায়, সেই মানুষ কখনোই বাংলাদেশে পুনরায় ফ্যাসিবাদের উত্থান হবে সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেবে না।'

জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'স্থানীয় সরকার নির্বাচন কি গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবে? এই সরকারের ম্যানডেট কী? জনগণের আকাঙ্ক্ষা কী? গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কী ছিল? বাংলাদেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রক্ত দিয়েছে শুধুমাত্র হারানো গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য। হারানো অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সন্তানরা রক্ত দিয়েছে। তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য জীবন দেয়নি। তারা জীবন দিয়েছে একটি গণতান্ত্রিক-রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য, যেটা প্রতিষ্ঠা হতে পারে জাতীয় সংসদের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।'

'বাংলাদেশের জনগণ সাংবিধানিকভাবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শপথ নিতে দেখেছে, আমরা অনুমোদন দিয়েছি, সুপ্রিম কোর্ট অনুমোদন দিয়েছে। সুতরাং এই সাংবিধানিক সরকারের সাংবিধানিক ম্যানডেটই হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংসদ নির্বাচন করা,' যোগ করেন তিনি।

আগামী সংবিধান কীভাবে হবে সংসদে নির্ধারিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা সংসদে বসে অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ সরকার ব্যবস্থা, আইন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করব সাংবিধানিক সংশোধনের মধ্য দিয়ে। গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংস্কার হবে সেখানে। বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার হবে সেখানে।'

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের সদিচ্ছা প্রমাণে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানান সালাহউদ্দিন।

Comments

The Daily Star  | English

No sharp rise in crime, data shows stability: govt

The interim government today said that available data does not fully support claims of a sharp rise in crimes across Bangladesh this year

15m ago