‘জনগণের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় না গেলে এতদিনের আন্দোলন ব্যর্থ হয়ে যাবে’
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অতীতের যেকোনো নির্বাচনের থেকে অনেক অনেক কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা নিয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন৷
আগামীর নির্বাচন নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, 'আগামীতে যে নির্বাচন হবে, সেটা নিয়ে আপনারা কেউ ভাবতে পারেন, এখানে তো প্রধান প্রতিপক্ষ নেই কিংবা দুর্বল প্রতিপক্ষ। সুতরাং নির্বাচন খুব সহজ হবে৷ আপনাদের একশো পার্সেন্ট গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, নো, নো অ্যান্ড নো৷ এই নির্বাচন অতীতের যেকোনো নির্বাচনের থেকে অনেক অনেক কঠিন হবে৷ কাজেই নিজেদের সেভাবে প্রস্তুত করুন৷'
তিনি বলেন, 'আগামী নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনী পুলসিরাত পার হতে হবে৷ সুতরাং জনগণের সঙ্গে থাকুন এবং জনগণকে সঙ্গে রাখুন।'
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের দলীয় নেতারা অংশ নেন৷ এ সময় দলের ভবিষ্যত পরিকল্পনা, দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, কৃষি ও শ্রমবাজারসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন কেন্দ্রীয় নেতারা৷
বিকেল ৪টার দিকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কর্মশালায় সমাপনী বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, 'আমরা একটা রাজনৈতিক দল, আমরা নির্বাচনে যাবো, সুতরাং আমরা নির্বাচন চাইবো৷ এটা লুকোচুরির কোনো ব্যাপার না৷ জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে যারা আসবে, তারা দেশ চালাবে৷ কিন্তু আমরা আমি-ডামি নির্বাচনে বিশ্বাসী না, নিশিরাত বা ভোট ডাকাতির নির্বাচনে বিশ্বাসী না৷ আমরা স্বচ্ছ ও স্বাভাবিক নির্বাচনে বিশ্বাসী, যেখানে মানুষ নির্ভয়ে ও নির্দ্বিধায় ভোট দেবে৷'
তিনি বলেন, 'যেকোনো মূল্যে এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষা করতে হবে। একইসঙ্গে বাকস্বাধীনতাকে রক্ষা করা আমাদের লক্ষ্য৷ জনগণের আস্থা নিজের পক্ষে রাখতে হলে আচার-আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে৷'
নেতাকর্মীদের দলের ঐক্য ও জনগণের আস্থা ধরে রাখার নির্দেশনা দিয়ে তারেক রহমান বলেন, 'বিগত ১৫ বছর অত্যাচার, নির্যাতন, মিথ্যা মামলার শিকার আপনারা হয়েছেন৷ আমাদের সহকর্মীদের অনেকে হাসপাতালের মেঝেতে, হাতকড়া পরা অবস্থায় জেলে মৃত্যুবরণ করেছেন৷ এত অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে আপনারা দলের ঐক্য, জনগণের আস্থা ধরে রেখেছেন৷ কিন্তু যারা নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য এই আস্থা-ঐক্য নষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে৷'
দলের ঘোষিত ৩১ দফা কর্মপরিকল্পনা নিয়ে গ্রামে-গ্রামে, ঘরে-ঘরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, 'দেশের মানুষকে নিয়ে যেসব কর্মসূচি নিয়েছি সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাইলে জনগণের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে হবে৷ তা না হলে এতদিনের আন্দোলন ব্যর্থ হয়ে যাবে৷'
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'স্বৈরাচারের মাথা পালিয়ে গেলেও লেজ কিন্তু রয়ে গেছে৷ তারা ভেতরে ভেতরে ষড়যন্ত্র করছে৷ সুতরাং সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে৷'
Comments