এস আলমের সঙ্গে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই: সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা

এস আলম গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম। ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম বিএনপির নেতাদের একাংশ। তাদের দাবি, একটি কারখানা থেকে বিএনপির নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেয়ে তারা সেখানে গিয়েছিলেন। ওই কারখানা থেকে গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার সঙ্গে তারা জড়িত ছিলেন না।

আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকার দোস্ত বিল্ডিংয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির পক্ষ থেক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান এবং একই কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন আবু সুফিয়ান। তিনি বলেন, 'যে ধরনের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদপত্রে এসেছে সে ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন মইজ্জার টেক এলাকায় এস আলম গ্রুপের ওয়‍্যার হাউজে গিয়ে এনামুল হক এনামের তত্ত্বাবধানে এস আলম গ্রুপের বেশকিছু গাড়ি বের করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে সহযোগিতা করেছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং সাজানো সংবাদ। আসল ঘটনা হলো, গত ২৯ আগস্ট চট্টগ্রামের কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকায় অবস্থিত মীর গ্রুপের পক্ষ থেকে তাদের প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোনে কে বা কারা প্রথমে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরবর্তীতে বিএনপির নাম দিয়ে টাকা চাঁদা দাবি করছে বলে এনামুল হক এনামকে অবহিত করেন। যদি চাঁদা না দেয়, তাহলে মীর গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা চালাবে বলেও হুমকি দেয়।'

'এ কারণে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। এখানে গাড়ি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার কিছু নেই। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এগুলো প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে কার গাড়ি ছিল সেটা জানার সুযোগ ছিল না,' দাবি করেন সুফিয়ান।

এনাম দাবি করেন, 'আমরা সেখানে গিয়েছিলাম বিএনপির নামে ফোনের কারণে। এছাড়া মীর গ্রুপের আব্দুস সালাম সাহেব এবং এস আলম মাসুদ সাহেব আত্মীয়। উনাদের ফ্যাক্টরিতে যদি এস আলম কিছু রেখে থাকেন তাহলে সেটার জবাব তো মীর গ্রুপ দেবে।'

সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্ন উত্তরে এক পর্যায়ে এনাম স্বীকার করেন মীর গ্রুপের মালিক সালাম তার মামাতো ভাই।

সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করলে একপর্যায়ে আবু সুফিয়ান বলেন 'এস আলমের সাথে আমাদের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই।'

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন জমি ও সম্পদ না কিনতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এস আলম গ্রুপের সম্পদ বিক্রি করে ব্যাংকের আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।

এই ঘোষণা আসার পর বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের কালুরঘাট শিল্প এলাকার একটি ওয়্যারহাউস থেকে বিলাসবহুল গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও অডি, পোরশে, রেঞ্জরোভার ইত্যাদি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে নগরের কালুরঘাট শিল্প এলাকায় (বিসিক) মীর গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউস এই দামি গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়ন গাড়িগুলো সরিয়ে নেয়ার কাজ তদারকি করছেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ির চালক মনসুরও এস আলমের গাড়িগুলো ওয়্যারহাউস থেকে বের করার কাজে তদারকি করছিলেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অর্থ পাচার ও ব্যাংক দখলে অভিযুক্ত এস আলম গ্রুপের মালিক ও তাদের স্বজনদের ব্যবহৃত গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার কাজে বিএনপি শীর্ষ নেতাদের সশরীরে উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, ওয়্যারহাউস থেকে সবগুলো গাড়ি বের হওয়ার পরই বিএনপি নেতা এনামসহ অন্যান্যরা ওই এলাকা থেকে সরে যান।

 

Comments

The Daily Star  | English

Homes of ex army chief Moeen U Ahmed, AL leaders attacked in Noakhali

The incidents occurred between 8:00pm and 2:30am. Upon receiving reports, separate teams from the army and police visited the sites.

25m ago