মা পদত্যাগ করেননি, তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী: জয়

শেখ হাসিনার দেশে ফেরার সম্ভাবনা
সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি এবং সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ায় তিনি চলে যান বলে দাবি করেছেন তার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেন জয়।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রায় ৩০০ মানুষ নিহত হওয়ার পর সোমবার থেকে নয়াদিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছেন হাসিনা।

তার ছেলে জয় ওয়াশিংটন থেকে রয়টার্সকে বলেন, 'মা কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। তিনি সময় পাননি।'

'তিনি একটি বিবৃতি দিয়ে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যেতে শুরু করে। সময় ছিল না। তিনি ব্যাগ গোছানোর সময়টুকুও পাননি। যতদূর জানি, সংবিধান অনুযায়ী তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।'

তিনি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট সামরিক প্রধান ও বিরোধী রাজনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ না করায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে।'

জয় বলেন, আওয়ামী লীগ দল আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং নির্বাচন আগামী তিন মাসের মধ্যে হতে হবে।

তিনি বলেন, 'আমি নিশ্চিত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। তা না হলে আমরা বিরোধী দল হবো। যাই হোক ভালো হবে।'

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রধান খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক বক্তব্যে তিনি উৎসাহিত হয়েছেন। যেখানে বিএনপি প্রধান বলেছেন, হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর কোনো প্রতিহিংসা দেখাবেন না।

জয় বলেন, 'আমি বেগম খালেদা জিয়ার বিবৃতি শুনে খুব খুশি হয়েছি যে অতীত অতীতই থাক। আসুন অতীত ভুলে যাই। আমরা যেন প্রতিহিংসার রাজনীতি না করি। ঐক্য সরকার হোক বা না হোক, আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।'

জয় দাবি করেন, তিনি 'বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজনে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক'।

তিনি বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি যে রাজনীতি ও আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তর্ক করতে পারি। আমরা একমত হতে পারি, ভিন্ন মত পোষণ করতে পারি এবং দিনশেষে একটি সমাধান খুঁজে বের করতে পারি।'

তিনি আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'মা এই মেয়াদের পর অবসর নিতে যাচ্ছেন। দল যদি আমাকে চায়, আমি অবশ্যই সেটা বিবেচনা করব।'

তিনি জানান, ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী তার মা দেশে ফিরে বিচারের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।

তিনি বলেন, 'গ্রেপ্তারের হুমকিতে আমার মা কখনো ভয় পাননি। মা কোনো অন্যায় করেননি। তার সরকারের লোকেরা বেআইনি কাজ করেছেন। তার মানে এই নয় যে মা তাদের আদেশ দিয়েছেন। তার মানে এই নয় যে মা এর জন্য দায়ী।'

বিক্ষোভের সময় মানুষকে গুলি করার অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের কারা দায়ী, সেটা তিনি বলেননি।

'একটি সরকার অনেক বড় যন্ত্র' দাবি করে জয় বলেন, 'যারা দায়ী, তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। মা কাউকেই আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংসতা করার নির্দেশ দেননি। পুলিশ সহিংসতা বন্ধ করার চেষ্টা করছিল, কিন্তু কিছু পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে।'

তিনি বলেন, 'আমি সেই আলোচনায় ছিলাম এবং আমার মাকেও বলেছিলাম যে আমাদের অবিলম্বে (ছাত্রলীগকে) বলতে হবে হামলা না চালাতে, সহিংসতা বন্ধ করতে।'

'আমরা সেই পুলিশ কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করেছি, যারা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করেছে। আমরা যতটা করতে পেরেছি, করেছি,' যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, চাইলেই তিনি দেশে ফিরতে পারেন।

জয় বলেন, 'আমি কখনোই বেআইনি কিছু করিনি। তাহলে কেউ আমাকে আটকাবে কেন?'

'রাজনৈতিক দলগুলো কোথাও যাচ্ছে না। আপনারা আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে পারবেন না। আমাদের সাহায্য ছাড়া, আমাদের সমর্থক ছাড়া আপনারা বাংলাদেশে স্থিতিশীলতাও আনতে পারবেন না,' যোগ করেন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English
August 5 declared as July Mass Uprising Day

Govt declares 3 new days for nat’l observance

The interim government yesterday declared August 5 as “July Mass Uprising Day” to commemorate the student-led protests that toppled the Sheikh Hasina regime that day last year.

5h ago