সংসদ ভেঙে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে: বৈঠক শেষে ফখরুল

সংসদ ভেঙে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে: বৈঠক শেষে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী পদক্ষেপ নেবে।

আজ সোমবার বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'আমাদের সব রাজনৈতিক দলগুলোকে এখানে ডেকে নিয়ে এসেছিল আলোচনা করার জন্য। যারা আন্দোলনের মূল নেতা—ছাত্রনেতা, সমন্বয়ক, তাদের সঙ্গে কথা বলছেন।'

তিনি বলেন, 'এখানে কতগুলো সিদ্ধান্ত হয়েছে, সংসদ ভেঙে দিয়ে অতি দ্রুত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে; বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হবে; ছাত্রনেতা যাদের অন্যায়ভাবে গত ১ জুলাই থেকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তি দেওয়া হবে; মুক্তি দেওয়া হবে সেসব মানুষকে যাদের অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে; শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া-পদত্যাগের পরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সব রাজনৈতিক দল-ছাত্ররা কাজ করবে।'

দেশবাসীর উদ্দেশে ফখরুল বলেন, 'আমরা বড় বিজয়, বড় সাফল্য অর্জন করেছি। আবার যেন সেটা অন্য দিকে প্রবাহিত না হয়, সে জন্য নিজেরা সংযমের পরিচয় দেই, ক্রোধ-ঘৃণা বা প্রতিশোধের বশবর্তী হয়ে আমরা যেন কাউকে আক্রমণ না করি। কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না করি, বিশেষ করে আমাদের যেসব বন্ধু-ভাইয়েরা ধর্মীয়ভাবে যারা সংখ্যালঘু তাদের ওপর যেন কোনো আক্রমণ না হয়। তাদের রক্ষা করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।'

এ সময় তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'যে ভয়াবহ প্রবণতা দেখা দিয়েছে, সেখান থেকে দেশকে রক্ষা করুন। কাউকে সুযোগ নিতে দেবেন না, যে সুযোগে দুর্বৃত্তরা-দুষ্কৃতিকারীরা অন্যের ওপর আঘাত হানবে।'

তিনি বলেন, 'জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করব। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশটাকে রক্ষা করব এবং সব অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদে আমরা আবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই ঐক্যকে দৃঢ় করে রেখে দেশকে দেশের শত্রু, বাইরের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করব।'

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমাদের নেতা তারেক রহমান এই আন্দোলনে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছেন প্রতি মুহূর্তে। এই ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাকেও অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য আমরা সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ইনশাল্লাহ সেটাও আমরা সফল হবো। আপনারা সবাই ধৈর্য ধরুন, শান্ত থাকুন।'

বৈঠকে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস ছাড়াও ছিলেন জাতীয় পার্টির জিএম কাদের, মজিবুল হক চুন্নু ও আনিসুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, হেফাজত ইসলামের মামুনুল হক, মুফতি মনির কাসেমী ও মাহাবুবুর রহমান, জামায়াতে ইসলামের ড. শফিকুর রহমান ও শেখ মো. মাসুদ, মেজর জেনারেল ফজলে রাব্বি (অব.), জাকের পার্টির শামিম হায়দার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা জালাল উদ্দীন আহমদ, গণসংহতি আন্দোলনের জুনায়েদ সাকী, গণ-অধিকার পরিষদের অ্যাডভোকেট গোলাম সারওয়ার জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, ফিরোজ আহমদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল হোসাইন, আরিফ তালুকদার, ওমর ফারুক ও মোবাশ্বেরা করিম মিমি এবং ইঞ্জিনিয়ার মো. আনিছুর রহমান।

Comments

The Daily Star  | English

Crowd control: Police seek to stop use of lethal weapon

The police may stop using lethal weapons and lead pellets for crowd control as their widespread use during the July mass uprising led to massive casualties and global criticism.

8h ago