‘৭ জানুয়ারি আ. লীগ প্রার্থীকে জেতাতে অনেক অপকর্ম করেছি’
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া এক উপজেলা প্রার্থীর নির্বাচনী জনসভায় স্বীকার করেছেন যে গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে তারা 'অনেক অপকর্ম' করেছেন। তবে উপজেলা নির্বাচনে তারা কোনো অপকর্ম করবেন না বলে ঘোষণা দেন।
গতকাল সোমবার বিকেলে মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া এলাকার ইভা কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শেখ আতাউর রহমানের নির্বাচনী সভায় এই স্বীকারোক্তি দেন জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া।
তার এই বক্তৃতার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে।
জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া তার বক্তৃতায় বলেন, 'গত ৭ জানুয়ারি জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী, নূহ (আ.) এর কিস্তির প্রার্থী, আমাদের প্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সুযোগ্য সন্তান মাহবুব উর রহমান রুহেলকে জেতানোর জন্য আমরা অনেক অপকর্ম করেছি। আমরা আগামী ৮ তারিখ কোনো অপকর্ম ছাড়া ভোটকেন্দ্র খোলা রাখবো। আমাদের অনেক প্রার্থী রয়েছেন। আপনি ভোটকেন্দ্রে আসবেন, যাকে খুশি তাকে ভোট দিবেন। আমাদের কোনো আপত্তি নাই।'
আগামী ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ হবে।
জাহাঙ্গীর ভূঁইয়ার এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটা তার নজরে এসেছে।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাদের নেতৃত্বেই সংসদ নির্বাচনে সব অপকর্ম হয়েছে। আর সেই অপকর্মের প্রতিফলন আমার ওপর হয়েছে।'
হঠাৎ করেই জাহাঙ্গীর ভূঁইয়ার 'অপকর্ম'র কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'জনগণের কাছে অপকর্মের কথা স্বীকার করে অপরাধের বোঝা কিছুটা হালকা করতে চেয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে।'
জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া দাবি করেন, 'মিরসরাইতে বিএনপি একটা অভিযোগ সব সময় করে যে তাদেরকে জোর করে হারানো হয়েছে। যদিও বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা অংশ নেয়নি, তারপরও তারা সেই অভিযোগ করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিগত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অনিয়মের যেসব অভিযোগ, সেই ধরনের কোনো অনিয়ম যেন এই উপজেলা নির্বাচনে না হয়, সেজন্য আমি ভোটারদের আশ্বস্ত করতে এই কথা বলেছি।'
'এখন নির্বাচন হলে প্রার্থী ও তার সমর্থকরা মনে করে, আমরা জিতে যাবো। ভোটাররাও মনে করে—ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নেই, অমুক প্রার্থী তো এমনিতে জিতে যাবে। এই মনোভাব পরিবর্তনের জন্য—অর্থাৎ ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত হন—সেই কারণে আমি বলেছি যে এই নির্বাচনে সবাই স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে, কোনো অনিয়ম হবে না, হতে দেওয়া হবে না,' যোগ করেন তিনি।
মিরসরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানসহ পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
Comments