খুলনা

খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আসছেন নেতাকর্মীরা

বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মাশরাফি মুর্তজাকে একটি মিছিলের নেতৃত্বে দেখা যায়। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

খুলনায় খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় পাঁচ বছর পর আজ সোমবার বিকেলে খুলনা নগরীর সার্কিট হাউস মাঠে দলীয় জনসভায় ভাষণ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভাকে কেন্দ্র করে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। আজ সকাল থেকেই খুলনা বিভাগের আশেপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা ট্রেন, বাস ও ট্রলারে করে খুলনায় পৌঁছাচ্ছেন। খুলনা রেলস্টেশন, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, রূপসা ফেরিঘাট, জেলখানা ঘাট এলাকায় নেমে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মিছিলসহকারে সমাবেশস্থলের দিকে এগোতে দেখা যাচ্ছে তাদের।

এদিকে জনসভাকে কেন্দ্র করে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করায় সকাল থেকেই নগরের সাধারণ মানুষের চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শিববাড়ি মোড়, রূপসা ফেরিঘাট মোড়, জেলখানা ঘাট, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে শহরের ভেতরে রিকশা, ভ্যান এমনকি মোটরসাইকেলও ঢুকতে দিচ্ছেন না। এতে বিপাকে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীসহ বিভিন্ন কাজে শহরে আসা লোকজন।

অনেকেই ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছেন সমাবেশস্থলে। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

ব্যাংকার রাকিবুল ইসলাম খুলনার ফুলবাড়ী গেট এলাকার বাসা থেকে মোটরসাইকেলে ডাকবাংলা এলাকায় তার কর্মস্থলের দিকে রওনা দেন। পথে অন্তত পাঁচ জায়গায় তার মোটরসাইকেল আটকে দেওয়া হয়। পরে বিভিন্ন পথ ঘুরে পৌনে ৯টার দিকে অফিসে পৌঁছান তিনি।

রাকিবুল বলেন, 'পরিচয়পত্র দেখানোর পরও আমাকে কোনোভাবেই মূল সড়ক দিয়ে আসতে দেওয়া হয়নি।'

সকালে সাড়ে আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত নগরীর শিববাড়ি মোড়, বয়রা বাজার, নতুন রাস্তা মোড়, ডাকবাংলাসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, অনেক মানুষ পায়ে হেঁটে যার যার গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, উপরের নির্দেশে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের পুরুষ সমর্থকরা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, জোড়া গেট ও রূপসা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বাসে করে আসতে পারবেন। নারী সমর্থকরা কেবল রেলস্টেশন পর্যন্ত বাসে করে আসবেন। পরে সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার হেঁটে সমাবেশস্থলে যাবেন।

মেহেরপুরের গাংনী থেকে দুটি বাস ও দুটি মাইক্রোবাসে করে ২০০ জনের একটি দল খুলানায় পৌঁছেছে রাত ১টার দিকে। সকাল ৯ টার দিকে মিছিল নিয়ে সার্কিট হাউসের দিকে যেতে দেখা যায় তাদের।

আরেকটি মিছিল। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

ওই দলে থাকা মকবুল হোসেন নামে একজন বলেন, 'রাতে খুলনায় পৌঁছে একটা হোটেলে পর্যায়ক্রমে ফ্রেশ হয়ে সকাল সকাল সার্কিট হাউসের দিকে যাচ্ছি। উদ্দেশ্য মঞ্চের কাছাকাছি অবস্থান করা।'

তবে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক ডেইলি স্টারকে জানান, আজ সার্কিট হাউস মাঠে থাকবেন শুধু নারী নেতাকর্মীরা। পুরুষ নেতাকর্মীরা থাকবেন মাঠের চারপাশের সড়কগুলোতে। মাঠ ছাড়াও নগরের কাস্টমস ঘাট থেকে শিববাড়ি মোড়, জেলখানা ঘাট, সদর থানার মোড়, হাদিস পার্ক ও হাজী মুহসীন রোডে মাইক দেওয়া হয়েছে। শিববাড়ি মোড়সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বসানো এলইডি মনিটরে দেখানো হবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।

তিনি আরও বলেন, 'বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে যেসব পুরুষ নেতাকর্মী আসবেন তারা রূপসা ঘাটে নেমে ফেরিতে পার হবেন। এ জন্য রূপসা ঘাটে পাঁচটি ফেরি দেওয়া হয়েছে। আর নারী কর্মীদের বহনকারী বাস নগরীর নতুন বাজার পর্যন্ত আসবে। এ ছাড়া জেলখানা ঘাটে তিন-চারটি ফেরি দেওয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের নেতাকর্মীর জন্য আজ সকালে একটি স্পেশাল ট্রেন থাকবে। সব মিলিয়ে জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।'

সমাবেশস্থলে নারী কর্মীদের ভিড়। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

আনুষ্ঠানিকভাবে আজ দুপুর ১টা থেকে শুরু হবে জনসভা। প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন বিকেল ৩টার দিকে। সভাপতিত্ব করবেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।

এর আগে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ এই সার্কিট হাউসেই আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

আজ খুলনায় ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে উদ্বোধন করার কথা আছে তার।

Comments

The Daily Star  | English
August 5 declared as July Mass Uprising Day

Govt declares 3 new days for nat’l observance

The interim government yesterday declared August 5 as “July Mass Uprising Day” to commemorate the student-led protests that toppled the Sheikh Hasina regime that day last year.

1h ago