বিএনপির তথ্য মিথ্যা, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি হয়নি: আইনমন্ত্রী

বিএনপির তথ্য মিথ্যা, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি হয়নি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো রাজনীতি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি আরও বলেন, সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে তথ্য উপস্থাপন করেছেন তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর।

আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।

আইনমন্ত্রী বলেন, 'গত ৩ অক্টোবর বিএনপির পক্ষ থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব অনেক মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করেছেন। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। গতকাল গণমাধ্যম সূত্রে আমি জানতে পারলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, "আইনমন্ত্রী এক সময় বলেছিলেন যে, দণ্ড স্থগিত করে বাসায় থাকতে দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই। এটা পারে শুধু আদালত। অথচ তার কিছু দিন পরেই সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশনেত্রী বাসায় এসেছিলেন।" ফখরুল ইসলাম সাহেবের এই বক্তব্য সর্বৈব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

'কারণ আমি কোথাও এবং কখনো এমন কথা বলিনি। আমার বক্তব্য সব সময় রেকর্ড করা থাকে বলে ২০১৬ থেকে এ পর্যন্ত কী বক্তব্য দিয়েছি, সেগুলো চেক করেছি; সেখানে কোথাও নেই। আমি একজন আইনজীবী। ফলে আমি বাংলাদেশের আইন-কানুন জানি। তাই আমার পক্ষে এ ধরনের কথা বলা সম্ভব নয়,' বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল সাহেব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খালেদা জিয়ার তুলনা করার চেষ্টা করেছেন মন্তব্য করে আনিসুল হক বলেন, '২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনা যখন চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন, তিনি তখন কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বা কয়েদি ছিলেন না। তিনি তখন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চাপিয়ে দেওয়া সব কয়টি মামলায় নিঃশর্ত জামিনে ছিলেন।

'তাকে যে জামিন দেওয়া হয়েছিল, সেখানে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ সে সময় তার বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে কোনো বাধা-নিষেধ ছিল না। তাই ২০০৮ সালে বিদেশে যাওয়ার সময় কোনো অনুমতি বা নির্বাহী আদেশের প্রয়োজন ছিল না। আইন মেনে তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন এবং আইনি অধিকারে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন,' বলেন আইনমন্ত্রী।

বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি রাজনৈতিকভাবে বিবেচনা করা হয়েছে—গণমাধ্যমকর্মীরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, 'আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, বেগম জিয়া বিদেশে যেতে চান এবং বিদেশে যেতে গেলে শর্ত মানা হবে এ রকম কোনো আমাদের সঙ্গে হয়নি।

'ব্যাপারটা হচ্ছে আইনি ব্যাপার। এখানে রাজনৈতিক কোনো ব্যাপার নেই। তিনি দরখাস্ত করেছিলেন, তার পরিবার করেছিল সেই দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে। পয়েন্টটা হচ্ছে সেইখানে। আইন বলে একবার নিষ্পত্তি করার পরে এটা এটা রিওপেন করা যায় না। সেটাই হচ্ছে আসল মোদ্দ কথা। সে জন্য বলা হচ্ছে, আইনে কোথাও নেই এই দরখাস্তে তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যায়,' বলেন আইনমন্ত্রী।

বলা হচ্ছে চাইলে শর্ত পরিবর্তন করার সুযোগ আছে—এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আইনে বলা আছে শর্তযুক্ত বা শর্তমুক্ত। শর্ত যদি দেওয়া হয়, যাকে শর্ত দেওয়া হচ্ছে তার মানতে হবে। এই সবগুলো হয়ে গেছে। আইনে আবার খোলার অবকাশ নেই। এটাকে আমরা বলি, পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজ ট্রানজেকশন।'

আরেক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর যে ক্ষমতা তিনি তা প্রয়োগ করেছেন। এটা পুনরায় প্রয়োগ করার কোনো সুযোগ নেই।'

Comments

The Daily Star  | English
US dollar price rises

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago