বিএনপিকে রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিতে দেবে না আ. লীগ
নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য বিএনপি যেহেতু আন্দোলন জোরদার করার পরিকল্পনা করছে, এ কারণে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজধানী তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বদ্ধপরিকর।
সূত্র জানায়, সরকার বিএনপি ও তার সহযোগীদের সমাবেশ ও মিছিলের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেবে তবে অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচির অনুমতি দেবে না যা সহিংসতা সৃষ্টি বা শহরকে স্থবির করে দিতে পারে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বিএনপি রাজধানীর বাইরে বেশ কয়েকটি রোডমার্চ ও সমাবেশের ঘোষণা দিলেও আওয়ামী লীগ সেসব নিয়ে চিন্তিত নয়।
তারা মনে করেন, বিএনপির আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হবে ঢাকাকেন্দ্রিক, যাতে রাজধানী সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ রাজধানীর রাস্তাগুলো বিএনপির নেতাকর্মীদের হাতে যেতে দেবে না এবং এ কারণেই আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতারা বিরোধী দলের রাজধানীকেন্দ্রিক কর্মসূচির ওপর কড়া নজর রাখছেন।
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দল রাস্তায় বিরোধীদের মোকাবিলা করবে না কারণ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে তারা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় যেতে চায় না।
তারা বলেন, বিএনপি কোনো 'সহিংস কর্মসূচি' নিলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের মোকাবিলা করবে।
তারা বলেন, রাজধানীতে বিএনপির কর্মসূচি প্রতিহত করতে এবং আওয়ামী লীগের শক্তি প্রদর্শনের জন্য 'শান্তি ও উন্নয়ন' প্রতিপাদ্যে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানায়, বিএনপি ও তার শরিকদের কোনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা না দিতে বলা হয়েছে। তবে বিরোধীদল অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
সামনের দিনগুলোতে হোটেল, রাজধানীর প্রবেশপথ এবং বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নজরদারি জোরদার করবে পুলিশ। তারা শহরে চেকপয়েন্ট বসাবে।
সূত্র জানায়, পুলিশ ইতোমধ্যে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের যেসব নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করেছে। তারা বলেন, বিএনপি ও তার সহযোগীরা 'সহিংস' কর্মসূচিতে গেলেই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব এবং আন্দোলনের নামে কাউকে সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেব না।'
তিনি বলেন, 'বিএনপির কর্মসূচির কারণে যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আমরা রাজধানী পাহারা দেব। আমরা বিএনপিকে ঢাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেব না এবং রাজধানীকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে দেব না।'
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন নির্বাচনী প্রচারণার জন্য নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করায় ঢাকা মহানগরকে (উত্তর ও দক্ষিণ) রাজপথে বিএনপিকে মোকাবিলা করতে হলে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা শহরের কাছের থানা ও উপজেলা ইউনিটগুলোকেও সিটি ইউনিটগুলোকে সহায়তা করতে বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকরা আজ ঢাকা মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
Comments