এত নিঃস্ব হয়ে গেছেন, বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে ঢোল পেটাচ্ছেন: ফখরুল
আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ দেশকে, জাতিকে জিম্মি বানিয়ে আবার একটা নির্বাচনের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম. সাইফুর রহমানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাইফুর রহমানের অবদানের বর্ণনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশকে মনে রাখতে হবে, অর্থনীতির মৌলিক পরিবর্তন তিনি নিয়ে এসেছিলেন। আজকে সরকার মিথ্যা কথা বলে, জনগণকে ভুল বুঝিয়ে, বাগাড়ম্বর করে চেষ্টা করেছে। এখন আর জনগণকে পারে না। এ জন্য ওরা এখন শক্তি প্রয়োগ করে। র্যাব, পুলিশ, বিজিবি—আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আমলাতন্ত্রকে দিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকতে চায় এবং সেটাই তারা করে আসছে।'
'তারা বলে, আমাদের অধীনেই নির্বাচন হবে, আমরা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করব। সবাইকে বলে। তোমাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে! তার আলামত তো আমরা এখন থেকেই দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি, বিরোধী দলের সব নেতাকর্মীকে তোমরা গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছো। মিথ্যা মামলা করছো, গায়েবি মামলা করছো,' বলেন ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, 'পুলিশের আইজি সাহেব বলেন, গায়েবি মামলা কী ওনি জানেন না। জানার কথা না, কারণ মামলাগুলো ওনি দেন তো; ওনার পুলিশ দেয়।'
তিনি বলেন, 'তারা (আওয়ামী লীগ) সম্পূর্ণ দেশকে, জাতিকে জিম্মি বানিয়ে আবার একটা নির্বাচনের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি; বিএনপি একা না, কারণ এই সমস্যাটা বিএনপির একার না—এই সমস্যা সমগ্র জাতির। আজকে সমগ্র জাতি বঞ্চিত হচ্ছে ভোটের অধিকার থেকে। আমাদের সংবিধানে যেটা বলা আছে, এটা জনগণের রাষ্ট্র। জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী দেশ চলবে। জনগণ যাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে তারাই শুধুমাত্র দেশ পরিচালনা করবে পাঁচ বছরের জন্য।'
'এখন সেটাকে তারা পুরোপুরি বদলে দিয়ে এটা আওয়ামী লীগের সংবিধানে পরিণত করেছে। সে জন্য আবারো তারা ওই নির্বাচনে যেতে চায়। তার জন্য কত রকমের ব্যবস্থা তারা করছে! প্রতিদিন অসংখ্য মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে,' বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের জের ধরে ফখরুল বলেন, 'ওবায়দুল কাদের সাহেব নাকি বলেছেন, ফখরুল এখন কী বলবেন? আমি বলি, আমার পরামর্শটা নেবেন? সেটা হচ্ছে, এই ছবিটা বাঁধিয়ে ওইটা গলার মধ্যে নিয়ে ঘুরে বেড়ান। সেটা আপনাদের যথেষ্ট সাহায্য করবে; বোঝানোর চেষ্টা করেন জনগণকে আমেরিকা-বাইডেন আমার সঙ্গে আছে।'
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'কয়দিন আগে তিনি বললেন, আমেরিকা এখন বলছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ নাকি তাদেরকে দিয়ে দেওয়ার জন্য। যেহেতু সেন্টমার্টিন দ্বীপ দিচ্ছে না সেই জন্য আমেরিকা নাকি তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। তাহলে এখন কি বুঝব আমরা, আপনি সেন্টমার্টিন দ্বীপ দিয়ে দিয়েছেন?'
তিনি আরও বলেন, 'র্যাবের ওপর থেকে স্যাশন উঠে যায়নি সেলফির জন্য। ভিসা নীতির পরিবর্তন হয়নি। তার জন্য আবার ডেমোক্রেসি কনভেনশন ডেকে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সুতরাং ভেবে-চিন্তে কথা বলবেন।'
'এত নিঃস্ব হয়ে গেছেন যে, বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলে এখন ঢোল পেটাচ্ছেন, আমরা জিতে গেছি! জেতাবে তো বাংলাদেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে। সেই ভোটটা ঠিক মতো হওয়ার ব্যবস্থা করেন,' বলেন তিনি।
Comments