রওশন এরশাদের অসুস্থতার সুযোগে কিছু মানুষ বিভিন্ন কাগজে সই নিচ্ছে: জিএম কাদের

জি এম কাদের। ছবি: সংগৃহীত

ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, রওশন এরশাদের সঙ্গে আমার কোনো সময়ই দ্বন্দ্ব ছিল না, এখনো দ্বন্দ্ব নেই। বেগম রওশন এরশাদের অসুস্থতার সুযোগে কিছু মানুষ বিভিন্ন কাগজে সই নিচ্ছে; অনেক বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে। আমার জানামতে এগুলো তিনি নিজের ইচ্ছায় দিচ্ছেন না।

ভারত সরকারের আমন্ত্রণে দেশটি সফর শেষে আজ বুধবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন জিএম কাদের। বিমানবন্দরের ফটকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার রওশন এরশাদ নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা–সম্পর্কিত তার সই করা বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জিএম কাদের বলেন, 'বেগম রওশন এরশাদ আমাদের ভাবি, তিনি আমাদের বড় ভাইয়ের স্ত্রী। বড় ভাইকে আমরা বাবার মতই দেখতাম, সে হিসেবে রওশন এরশাদ আমাদের মায়ের মতো। তাকে দিয়ে যারা এগুলো করাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।'

তার দাবি, 'জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করতে কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করছে। কিছু মানুষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে "দেবর-ভাবির দ্বন্দ্ব" ছড়াচ্ছে, তারাই উস্কে দিচ্ছে। জাতীয় পার্টি যাতে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়াতে না পারে এবং আমাদের ইমেজ নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তারা প্রমাণ করতে চায়, জাতীয় পার্টির শক্তি নেই, পার্টিতে ঐক্য নেই। ষড়যন্ত্রকারীরা নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর মাঝে জাতীয় পার্টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, 'ভারত সরকারের আমন্ত্রণে সে দেশে গিয়েছিলাম। বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। কার কার সঙ্গে এবং কী বিষয়ে আলাপ হয়েছে তা বলতে পারব না। তবে উনারা চাইলে প্রকাশ করতে পারেন। আমার পক্ষে তাদের অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমরা বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। দুটি দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতীয় পার্টি সম্পর্কে তাদের ভালো ধারণা আছে। তারা জাতীয় পার্টিকে সম্ভাবনাময় দল মনে করেন। তারা আশা করছেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভবিষ্যতেও সৌহার্দপূর্ণ থাকবে। বাংলাদেশে একটি ভালো নির্বাচন দেখতে চায় ভারত। নির্বাচনের আগে ও পরে যেন কোন সহিংসতা না হলে ভারত খুশি হবে। এদেশে ভারতের অনেক বিনিয়োগ আছে, তাই ভারত চায় সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে পরবর্তী সরকার গঠন হোক। ভারত চায় আমরা সবাই মিলে যেন সুন্দর নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করি। বাংলাদেশে কোনো সহিংসতা বা স্থিতিশীলতা যেন নষ্ট না হয়।

বিভিন্ন দলের মতদ্বৈততা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের বক্তব্য হচ্ছে, বিভিন্ন দলের মতদ্বৈততা এটা বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার। ভারত চায় আমরা যেন আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করি। তারা বলেছে, জাতীয় পার্টির গ্রহণযোগ্যতা আছে। তাই সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সুন্দর নির্বাচন করতে পারলে তারা খুশি হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনো আসেনি। আমরা আরও কিছু দিন দেখে আমাদের সিদ্ধান্ত নেব। আমরা নির্বাচন বর্জন করব—এ কথা আমরা কখনোই বলিনি। আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করেই নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা চাই আগামী নির্বাচন যেন ভালো হয়। আমাদের পার্টি আমরা চালাব, এ ব্যাপারে তাদের বার্তা দেওয়ার কিছু নেই। সহিংসতা ছাড়া একটি ভালো নির্বাচন দেখতে চায় ভারত।

 

Comments

The Daily Star  | English

Drug smuggling via air, land routes on the rise

This grim picture emerges as Bangladesh, like other countries around the world, observes the International Day Against Drug Abuse and Illicit Trafficking today.

12h ago