বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করতে ভয়াবহ কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা করছে সরকার: ফখরুল

বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করতে ভয়াবহ কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা করছে সরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, 'এই সরকার পরিকল্পনা করছে যে, এই দেশে ভয়াবহ কিছু ঘটিয়ে যাতে করে নির্বাচনে বিরোধীদের সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করা যায়; যেমন করে আগে দুটি নির্বাচন করেছে সেভাবে আরেকটি নির্বাচন কীভাবে করে নেওয়া যায়। সেই লক্ষ্যেই তারা এগোচ্ছে।'

আজ সোমবার দুপুরে নয়পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথসভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, 'আমরা মনে করি, বাংলাদেশের এই বায়ান্ন বছরের মধ্যে এটা সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্ত এখন। এ জন্য যারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে তারা সর্বশক্তি দিয়ে সবচেয়ে যে ক্ষতিটা করেছে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'আজকে শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দিয়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষাগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে প্রশাসন বলুন, বিচার বিভাগ বলুন, গণতন্ত্র, অর্থনীতি সবখানে একনায়কতন্ত্র। চরম ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।'

'আজকে পত্রিকায় নিউজ দেখলাম, একটা কোম্পানি ১১ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই দেশের মানুষের এবং সাইলেন্ট, চোখ বন্ধ। সরকার কোথায়? একটা দিকেই সরকার আছে, বিরোধী দল—জনগণ যাতে প্রতিবাদ করতে না পারে। যার ফলে তাদের বড় বড় কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে বলে, "আমরা দেখে নেব কী করে বিরোধী দল ক্ষমতায় আসতে পারে"। আমরা বিরোধী দলকে ক্ষমতায় আনতে চাই না। আমরা জনগণকে ক্ষমতায় আনতে চাই। আমরা জনগণকে তাদের হারানো অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই,' বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ বলেছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার জড়িত—এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফখরুল বলেন, 'ব্যাপার হচ্ছে যে, পুরো বিষয়টাই (বিচার প্রক্রিয়া) একেবারে আমি বলব যে, একটা সাজানো নাটক। কারণ, যেখানে মিটিং হওয়ার কথা ছিল সেখানে মিটিং না হয়ে অন্য জায়গায় মিটিং শিফট করে গেল…এটা দেখভাল করার জন্য যে পুলিশ, ডিএমপি তাদেরকে সেটা ইনফার্ম করা হয়নি।'

'দ্বিতীয় বিষয় হলো, তারেক রহমানের নাম এফআইআরে ছিলই না, কখনোই ছিল না। ৩ বার এফআইআর হয়েছে, তার মধ্যে একবারও তার ছিল না। এর পরে একজন ব্যক্তি, যিনি আগে রিটায়ার্ড করেছিলেন কাহার আখন্দ, যিনি আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেশন চেয়েছিলেন, তাকে নিয়ে এসে পুনরায় চাকরি দিয়ে তাকে এই মামলার আইও করা হয়। সেই ভদ্রলোক তখন তারেক রহমানের নাম সেখানে দিলেন,' বলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি আরও বলেন, 'তারেক রহমানের কোথাও উচ্চারিত হয়নি পুরো ইনভেসটিগেশনে। একমাত্র মুফতি হান্নানকে দিয়ে বলানো হয়েছিল প্রায় ১৪৫ দিন আটক করে রাখার পরে, রিমান্ডে নেওয়ার পরে এবং তিনি সেটাকে কিন্তু অস্বীকার করে আবার এফিডিভেট দিয়েছিলেন, সেটাকে গ্রহণ করা হয়নি।'

'আর তড়িঘড়ি করে যাতে সে কোর্টে গিয়ে কিছু বলতে না পারে; অন্য একটা মামলায় ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, তার ইতোমধ্যে ফাঁসি কার্যকর করে তাকে আর কোর্টে আসার সুযোগই দেওয়া হলো না। তাহলে এটাকে আমরা কী বলব?' প্রশ্ন রাখেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, 'এটাই নয় শুধু, আমার কাছে রেকর্ডস আছে। এখানে ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারেক রহমানের নাম এখানে দেওয়া হয়েছে, বিএনপির নেতাদের নাম এখানে দেওয়া হয়েছে। পুরোপুরি এ বিষয়টার কোনো সুষ্ঠু তদন্ত না করেই এই কাজটা করা হয়েছে। আমরা বারবার বলে এসেছি, একটা নিরপেক্ষ-সুষ্ঠু তদন্ত হোক।'

'২১ আগস্টের ঘটনার আমরা নিন্দা জানাই। এটা নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অন্যতম জঘন্য ঘটনা এবং নিন্দনীয়। একইসঙ্গে সমগ্র মানুষের যে প্রত্যাশা, অযথা, রাজনৈতিক কারণে রাজনৈতিক নেতাদের নাম দিয়ে সেখানে আজকে যে রাজনৈতিক ফায়দা লুটা হচ্ছে এটা কেউ সমর্থন করতে পারে না। আমরা আবারো বলছি, এখানে তারেক রহমান সাহেব, বিএনপি আব্দুস সালাম পিন্টু বা আমাদের লুৎফর জামান বাবর—তারা কেউ এটার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এদের রাজনৈতিক কারণে জড়িত করা হয়েছে,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
EU helping Bangladesh to strengthen border security

EU recommends revising ICT's legal framework in line with int'l standards

EU also underlined the importance of ensuring due process at all stages of proceedings to ensure justice

1h ago