রংপুরে প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশ

খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসছেন নেতাকর্মীরা

খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসছেন নেতাকর্মীরা
মহাসমাবেশে অংশ নিতে সকাল থেকেই স্লোগানসহকারে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ছবি: কংকন কর্মকার/ স্টার

জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে অংশ নিতে সাড়ে ৪ বছর পর রংপুরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। মহাসমাবেশে অংশ নিতে সকাল থেকেই স্লোগানসহকারে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

আজ বুধবার সকাল থেকে জিলা স্কুল মাঠের প্রবেশপথে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেকে রাতেই এসে সমাবেশস্থলের আশেপাশে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া সমাবেশের প্রবেশপথে গাইবান্ধা ও দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীদের উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। 

সমাবেশ উপলক্ষে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম থেকে রংপুরে ৮টি বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এসব ট্রেনে করে ৮ জেলার ৫৮টি উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন।

সমাবেশ উপলক্ষে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম থেকে রংপুরে ৮টি বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ছবি: স্টার

এ ছাড়া বাস, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করেও নেতাকর্মীরা আসছেন সমাবেশে অংশ নিতে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত সমাবেশ স্থলের আশেপাশে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা গেছে।

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোতাহার হোসেন মণ্ডল মওলার উদ্যোগে সকাল থেকে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। গঙ্গাচড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বাবলুর নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা এসেছেন রাতেই। তারা সকাল থেকেই সমাবেশস্থলের প্রবেশপথে অপেক্ষা করছিলেন। তবে এখনো প্রবেশের অনুমতি মেলেনি।

জিলা স্কুল মাঠ ও আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জনসভার মাঠে প্রবেশের জন্য ৩টি গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গেটগুলোতে বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। একটি গেট দিয়ে লাল, হলুদ ও সবুজ কার্ডধারীরা প্রবেশ করতে পারবেন। 

এ ছাড়া মঞ্চের সঙ্গে আরেকটি ভিআইপি গেট রয়েছে। যে গেট দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য অতিথিরা প্রবেশ করবেন। 

দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রংপুরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কঠোর অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। যারা মাঠে প্রবেশ করবেন, তাদের প্রত্যেককে পুলিশ তল্লাশি শেষে প্রবেশ করতে দেবেন। কড়া নজরদারিতে রয়েছে এসএসএফ। এ ছাড়া মঞ্চের পেছনে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে। 

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, 'জনসভার নিরাপত্তায় পোশাক পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি অস্ত্রসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে। জনসভাস্থল ছাড়াও পথে পথে রুট ডিউটি, চেকপোস্ট, পুরো নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ ও মোড়ে মোড়ে আছে সদস্যরা। উঁচু ভবনের ছাদে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর প্রতি ফ্লোরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে।' 

তিনি আরও বলেন, 'জনসভাস্থল, পুরো শহর এবং সার্কিট হাউস পুরোটাই আমরা সিসিটিভির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করছি। সেই সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ১ হাজারেরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যেগুলো ডিজিটালি মনিটরিং করা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবও থাকছে সার্বক্ষণিক। সব মিলিয়ে রংপুর নগরীর এখন নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা।'

রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজিত জনসভায় বিকেল ৩ টা ৫ মিনিটে জিলা স্কুল মাঠের জনসভায় উপস্থিত হবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।

এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ বক্তব্য রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এ সময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুটি নির্বাচনী জনসভা করেছেন। সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় পর শেখ হাসিনা রংপুরে আসছেন। এর আগে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের জনসভায় এসেছিলেন তিনি।

 

Comments