চট্টগ্রাম

বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর: মামলা নিয়ে পুলিশ-বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

চট্টগ্রাম ১০ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাঙচুরের অভিযোগে এক কর্মীর মামলা নিলেও নগর বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়িতে বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনার পর সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ছবি: স্টার

চট্টগ্রাম ১০ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাঙচুরের অভিযোগে এক কর্মীর মামলা নিলেও নগর বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।

বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, থানায় তাদের ঘণ্টাখানেক বসিয়ে রেখে কার্যালয় ভাঙচুরের কোনো ঘটনাই ঘটেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে, অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে বৃহস্পতিবার রাতে আসতে বলা হলেও আইনজীবীরা সেসময় থানায় যাননি। পুলিশের দাবি, কেবল ছবি তুলে দেখানোর জন্যই তারা থানায় এসেছিলেন।

পুলিশের এমন কথায় দ্বিমত প্রকাশ করে আইনজীবীরা জানান, বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশ পুরো একপেশে আচরণ করেছে। তাই তারা আগামী রোববার আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেবেন।
 
গত বুধবার বিকেলে বিএনপির পদযাত্রা থেকে খুলশী থানার লালখান বাজারে চট্টগ্রাম–১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। পরে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কোতোয়ালি থানার কাজির দেউড়ির বিএনপি কার্যালয়ে পাল্টা হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, এসময় 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা বিএনপি কার্যালয়ের নিচতলায় দুটি কক্ষে ভাঙচুর চালায় এবং কার্যালয় প্রাঙ্গণের ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে রাস্তায় নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের ঘটনায় আরিফুল ইসলাম নামে একজন খুলশী থানায় বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নগর বিএনপি সূত্র জানায়, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় ৪০ জন আইনজীবীর একটি দল লিখিত অভিযোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে কোতোয়ালি থানায় যায়। সেখানে তারা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুবেল হাওলাদারের সঙ্গে কথা বলেন। অভিযোগের বাদী ছিলেন বিএনপি কার্যালয়ের কেয়ারটেকার মো. হাসান। এতে কার্যালয়ের নিচতলায় লোহার গেট ভেঙে আসবাবপত্র ভাঙচুর ও ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে তছনছ করে তাতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।
 
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের নেতৃত্বদানকারী অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বাদীসহ অভিযোগ নিয়ে প্রথমে ডিউটি অফিসারের কাছে যাই। এর কিছু সময় পর বাদীকে পুলিশ জেরা করে। ৪০ মিনিট বসার পর পরিদর্শক (তদন্ত) রুবেল হাওলাদার তার রুমে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন।'

'রুবেল বলেছেন, ভাঙচুরের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আগুনের বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু ময়লা ছিল তাতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমরা ছবি নিয়ে গিয়েছি। তিনি ঘটনা অস্বীকার করে মূলত আমাদের অভিযোগের মেরিট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাই পরবর্তীতে আর যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না', বলেন সাত্তার।
 
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইনজীবীরা যখন এসেছেন তখন আমি লালদিঘিতে আওয়ামী লীগের সভায় দায়িত্বরত ছিলাম। তাদের পরে আসতে বলেছি। তারা আসেননি।'

আইনজীবীদের অভিযোগের বিষয়ে পরিদর্শক (তদন্ত) রুবেল হাওলাদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইনজীবীরা এসে তাড়াহুড়া শুরু করেন। তাদের রাত ৯টার দিকে ওসি স্যার আসলে কথা বলতে বলেছি। কিন্তু তারা আসেননি। তাদের কাছে অভিযোগের প্রমাণ থাকলে সে বিষয়ে কথা বলার জন্য তো আসতে হবে।'
 
এর আগে, বুধবার নগর পুলিশের দক্ষিণ জোনের উপপুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, 'এখানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। আইন সবার জন্য সমান। এখন যদি তারা (বিএনপি) আসেন, যদি মামলা নেওয়ার মতো কিছু থাকে আমরা নেব।'

এদিকে, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে নগর বিএনপি।

 

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

13h ago