লক্ষ্মীপুরে কৃষকদল কর্মী সজিব হত্যাকাণ্ড অরাজনৈতিক: পুলিশ
লক্ষ্মীপুরে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের মধ্যে নিহত হন কৃষকদলের কর্মী সজিব হোসেন।
পুলিশ বলছে, এ হত্যাকাণ্ড অরাজনৈতিক। পুলিশ বা কারও গুলিতে নয়, ধারালো অস্ত্র বা ছুরির আঘাতে সজিবের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও স্বজনরা বলছেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সজিবকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
আজ বুধবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, 'সজিবের মরদেহ উদ্ধারের স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সজিব আহত অবস্থায় ফিরোজা ভবনে ঢুকে পড়ে।'
'মৃত্যুর আগে সেখানে একজনের সঙ্গে সজিবের কথা হয়' উল্লেখ করে এসপি বলেন, 'সজিব তাকে বলেছিলেন যে তিনি বিএনপির প্রোগ্রামে আসেননি। ৪-৫ জন তাকে কুপিয়েছে। সজিবের কাছে তারা টাকা পেত। এরপর সজিব আর কোনো কথা বলতে পারেননি।'
এসপি জানান, ঘটনাস্থলে যারা ছিলেন তারা ৯৯৯ এ কল করে সজিবের চিকিৎসার জন্য পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। অ্যাম্বুলেন্সেও কল করেছিলেন তারা। কিন্তু সংঘর্ষের কারণে অ্যাম্বুলেন্স সেখানে যেতে পারেনি।
পুলিশ যাওয়ার আগেই রক্তক্ষরণে সজিব মারা যান বলে জানান এসপি মাহফুজ্জামান।
গতকাল বিকেল ৫টার দিকে জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমাহল-রামগতি আঞ্চলিক মহাসড়কে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষ নিহত সজিবের মরদেহ গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ এলাকায় পাঠানো হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের গোডাউন রোড এলাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির বাসভবন প্রাঙ্গণে সজিবের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত হয়ে সজিবের দাদা ও চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো. হানিফ মিয়া বলেন, 'সজিব আমার সঙ্গে বিএনপির কর্মসূচিতে এসেছিল। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।'
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, 'ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সজিবকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এর নেতৃত্বে ছিলেন সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এসপি এখন বলছেন, সজিব হত্যাকাণ্ড অরাজনৈতিক। এতে বোঝা যায় যে পুলিশের কেউ এ হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করেছে।'
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দীন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিকেল ৩টার দিকে নিহত সজিবের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে।'
Comments