বিএনপির সভা পণ্ড করে আ. লীগ নেতাকর্মীদের ভুরিভোজ
পুলিশের বাধা ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মহড়ায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কাঞ্চন পৌর বিএনপির পরিচিতি সভা পণ্ড হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা।
আজ সোমবার সকাল ১০টায় পৌরসভার চরপাড়া এলাকায় এই সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
বিএনপি নেতারা বলছেন, কাঞ্চন পৌর বিএনপির নতুন কমিটির এই পরিচিতি সভায় অন্তত এক হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তাদের অভিযোগ, রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে অর্ধশতাধিক পুলিশের একটি দল এসে সভা না করার নির্দেশ দেয়। এদিকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সভাস্থল ঘেরাও করে রাখেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী। বিএনপির সভা পণ্ড করে পরে তারা সভাস্থলের পাশেই ভুরিভোজ সারেন।
কাঞ্চন পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান ভূঁইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২ এপ্রিল কাঞ্চন পৗর বিএনপির ১০১ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। আজ ওই কমিটির প্রথম পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম ফারুক খোকনের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। সভা উপলক্ষে এক হাজার নেতা-কর্মীর জন্য রান্না-বান্নার আয়োজন করা হয়। কিন্তু রাতে পুলিশ এসে আমাদের অনুষ্ঠান করতে বাধা দেয়। পুলিশ চলে যাওয়ার পর সকাল থেকে কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি, সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন মিয়া এবং রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হেমায়েত হোসেনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে রাখে। তারা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা হাতে মহড়া দেন।'
যেসব নেতাকর্মীরা সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন তারা সবাই মহড়া দেখে ফিরে যান জানিয়ে মজিবুর রহমান ভূঁইয়া আরও বলেন, 'আমরা কেউই সভাস্থলে ঢুকতে পারিনি। ভেতরে খাবারের সব সরঞ্জাম নষ্ট করা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের অনুষ্ঠানস্থলের পাশেই ভুরিভোজ করেছে।'
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম ফারুক খোকন বলেন, 'এটা পূর্বঘোষিত একটা অনুষ্ঠান ছিল। ২ দিন ধরে সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা সভা বাতিলের চেষ্টা করে আসছিলেন।'
এ বিষয়ে কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলির ভাষ্য, বিএনপির 'নৈরাজ্য' ঠেকাতে সকাল ৭টা থেকে চরপাড়া এলাকায় অবস্থান নেন তারা। তার নেতৃত্বে প্রায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মী বিকেলে ৩টা পর্যন্ত সেখানে ছিলেন। সেখানেই রান্না করে খাওয়া-দাওয়া করেন তারা।
কলি বলেন, 'চরপাড়ায় সভার নামে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছিল বিএনপি নেতাকর্মীরা। তারা যাতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের মতো নৈরাজ্যকর কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমরা অবস্থান নেই। আমরা কারও সঙ্গে ঝামেলায় যাইনি।'
এদিকে পরিচিতি সভা আয়োজনে পুলিশের বাধার অভিযোগ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার ('গ' সার্কেল) আবির হোসেন বলেন, 'পরিচিতি সভাকে ঘিরে বিএনপির ২টি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। একইসঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেও এক প্রকার উত্তেজনা ছিল। পরিস্থিতি বিবেচনায় পুলিশ রাত থেকে সতর্ক অবস্থানে ছিল। তবে কাউকে কোনো অনুষ্ঠান করতে পুলিশ বাধা দেয়নি।'
Comments