‘আজকের বৈশ্বিক সংকটে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন মার্ক্স’

আলোচনা সভায় বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

১৮১৮ সালে আজকের দিনে জন্ম নেওয়া কালজয়ী জার্মান দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ ও সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী কার্ল মার্ক্স এই 'সংকটময় একুশ শতকে' এসে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন একটি আলোচনা সভায় অংশ নেওয়া বক্তারা।

কার্ল মার্ক্সের ২০৫তম জন্মজয়ন্তী ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার হলের সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে সকাল ১০টায় শুরু হওয়া প্রথম পর্বের আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এম এম আকাশ।

এই পর্বে 'বাংলায় মার্ক্স' শিরোনামে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন মার্ক্সবাদী ঐতিহাসিক, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রবীণ নেতা ও মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিক ভানুদেব দত্ত । এ বিষয়ে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন  প্রিন্স।

বেলা ৩ টায় দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। এই পর্বে 'মার্ক্স ভাবনা আজ ও আগামীকাল' শীর্ষক মূল আলোচনা উত্থাপন করেন ভারতের প্রখ্যাত মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিক অধ্যাপক শোভনলাল দত্তগুপ্ত। বক্তব্য দেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্ক্সবাদী) তাত্ত্বিক নেতা শান্তনু দে ও সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান।

২ পর্বের আলোচনায় দেশের বিশিষ্টজনদের পাশাপাশি অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন বামপন্থী প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। মূল আলোচকরা তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক শোভনলাল দত্তগুপ্ত বলেন, 'যারা মার্ক্সের তত্ত্বের ঘোরতর বিরোধিতাও করেন, তারাও  সমাজ বিকাশের ইতিহাস ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মার্ক্সের গুরুত্ব  অস্বীকার  করতে পারবেন না। মার্ক্স কেবল একজন দার্শনিক ছিলেন  না; তিনি ছিলেন শোষিত সমাজ পরিবর্তনের একজন সক্রিয় সৈনিক। আজকের এই বৈশ্বিক  সংকট  ও মানব সভ্যতার বিপর্যয়ের সময় মার্কস আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে  উঠেছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'এক কথায় মার্ক্সকে ব্যাখ্যা করা যাবে না। তার সমাজ বিকাশের ইতিহাস  ব্যাখ্যা করার পদ্ধতি  অবলম্বন  করে মার্ক্সবাদ ব্যাখ্যা করতে  হবে। গোটা পৃথিবীর শোষিত মানুষের ইতিহাস, শোষণের কারণ  তিনি আলোচনা  করে গেছেন। ১৯৫৩ পরবর্তী লেখাগুলোতে ভারতবর্ষের সমাজ ব্যবস্হা ও পুঁজিবাদের বিকাশ নিয়ে বিস্তারিত  আলোচনা  করেছেন তিনি।'

অন্য বক্তাদের ভাষ্য ছিল, মার্ক্সকে ধারণ করতে হবে তার সমাজ বিশ্লেষণের পদ্ধতিকে অনুসরণ করে। এক কথায় বলতে চাইলে মার্ক্সবাদ হলে পুঁজিবাদের বিকল্প একটি আধুনিক মতবাদ, যা শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার ধারণা দেয়।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

4h ago