মে দিবস

শ্রমিকের জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি সিপিবির

সিপিবি
মে দিবস উপলক্ষে সকালে ঢাকার পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও মিছিল করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। ছবি: সংগৃহীত

মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সমাবেশ ও মিছিল করেছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও পরে লাল পতাকা মিছিল করে সিপিবি।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার এবং বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রীয় মালিকানার নীতিতে দেশ পরিচালনার কথা থাকলেও সরকার উল্টো পথে চলছে। লুটেরা পুঁজিপতিরা বার বার রাষ্ট্র ক্ষমতা ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কল-কারখানা বন্ধ করছে। বিরাষ্ট্রীয়করণের নামে অবাধ লুটপাট অব্যাহত রাখছে। ব্যক্তি মালিকানার নামে অনেক ক্ষেত্রে শ্রমজীবী মানুষের ওপর শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি করে লুটপাটের নতুন ধারা তৈরি করার হচ্ছে।

সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক এ এন রাশেদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টির অন্যতম উপদেষ্টা শ্রমিক নেতা মনজুরুল আহসান খান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহসাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

মনজুরুল আহসান খান বলেন, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে এখনো শ্রমআইন প্রতিষ্ঠা করা হয়নি বরং শ্রমিকের গণতান্ত্রিক অধিকার ধ্বংস করতে নতুন নতুন আইন করা হচ্ছে। দেশের শ্রমআইনে শ্রমিকদের যতটুকু অধিকার দেয়া আছে, ততটুকুও প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেয়া হয় না।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, শ্রমজীবী মানুষের ওপর শুধু শোষণ নয়, তার যতটুকু শ্রমঅধিকার আছে তা দিন দিন খর্ব করার চেষ্টা চলছে সরকার। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও পরিপূর্ণ শ্রমঅধিকার বাস্তবায়ন হয়নি। সব শ্রমিক এখনো নিয়োগপত্র পায় না। বেঁচে থাকতে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে বাধ্য হয়। অধিকাংশ শ্রমিকের কাজের নিশ্চয়তা নেই।

তিনি অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, এই বিল পাশ হলে শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ হবে।

তিনি শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও শ্রমঅধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শোষণ মুক্তির সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, মে দিবসের বিপ্লবী প্রেরণায় শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শোষণমুক্তির সংগ্রাম অগ্রসর করতে হবে। চলমান দু:শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করতে হবে।

মিহির ঘোষ বলেন মহান মে দিবসে নতুন করে শপথ নিয়ে শ্রমিকশ্রেণিকে সব ধরনের শোষণ-নির্যাতন-নীপিড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ তীব্র সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক এ এন রাশেদা বলেন জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। সকল সেক্টরে মানবিক জীবনযাপন উপযোগী ন্যূনতম মজুরি, বোনাস দিতে হবে। রেশনিং, বাসস্থান ও শিক্ষা-স্বাস্থ্যের সুরক্ষা দিতে হবে। পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করাসহ সংবিধান এবং আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রমআইন-বিধি সংশোধন ও কার্যকর করতে হবে, শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী রেশন ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

সমাবেশ শেষে র‍্যালিটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

সমাবেশের আগে উদীচির শিল্পীরা গণসংগীত পরিবেশন করেন।

এছাড়াও মে দিবসে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় নানাবিধ কর্মসূচি পালিত হয়। ঢাকায় পুরানা পল্টনের পাশাপাশি  মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও সূত্রাপুরেও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Admin getting even heavier at the top

After the interim government took over, the number of officials in the upper echelon of the civil administration has become over three times the posts.

10h ago