মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে আ. লীগ আগুন লাগাচ্ছে: ফখরুল

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে আওয়ামী লীগ আগুন লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সারের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি এই কথা বলেন।

জাতীয়তাবাদী কৃষক দল এই সমাবেশের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'সব দেশে কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া হয়। আমাদের দেশে কৃষকের গলা টিপে ধরার জন্য সরকার সারের দাম প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়েছে। ধান যে বিক্রি করতে যাবে, তারাই বলছে ২৯ টাকা খরচ হয় প্রতি কেজিতে। দাম দিতে চায় কত? ৩০ টাকা। ৫ টাকা সারের দাম বাড়ালেন আর আমাকে দিচ্ছেন ৩০ টাকা, আমি বেঁচে থাকব কী করে? টিকব কী করে?'

'শুধু ফসল ফলানোর ক্ষেত্রেই নয়, এই সরকার আসার পরে পোল্ট্রি, গরুর ফার্ম—এরাও পথে বসে গেছে। শুধু বড়রা বড় হচ্ছে আর যারা মাঝারি বা ছোট তারা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কিছু দিন আগে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বড় বড় ফার্মগুলো এমনভাবে দাম ঠিক করে যে টিকে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অথচ মুরগির দাম, ডিমের দাম কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে কমছে না-বাড়ছেই। অর্থাৎ যে উৎপাদন করে, যেখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় সেটা বাদ দিয়ে বড়লোকদের জন্য; সরকারের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক আছে তাদের টিকিয়ে রাখার জন্য এই সরকার কাজ করছে,' বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'এই সরকার সাধারণ মানুষের সরকার নয়। আজকে দেখুন, আমাদের জিনিসপত্রের দাম কীভাবে বেড়েছে। চাল-ডাল-তেল-লবণ কী অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে, চিন্তাও করা যায় না। অথচ তাদের (আওয়ামী লীগ) এই ব্যাপারে কোনো ঘাটতি নেই। তারা বলে এটা সহনশীল পর্যায়ে আছে। আয়ও বেড়েছে। আয় কার বেড়েছে? আয় বেড়েছে আওয়ামী লীগের, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। যারা চুরি-ডাকাতি, মানুষের লুট করে তাদের আয় বেড়েছে। সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি।'

ফখরুল বলেন, 'এই সরকার সবগুলো খাতকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা কৃষিকে ধ্বংস করেছে, অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, একটা লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। এত আগুন লাগছে কেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা পরিবেশের কারণে লাগছে। পরিবেশ বিপর্যয় কে করেছে? এই সরকার যেখানেই জায়গা পায় বিল্ডিং তুলে দেয়, বাজার চালু করে।'

'বঙ্গবাজারে যেখানে ২০টি দোকান হওয়ার কথা ছিল সেখানে ৪০টি দোকান। এইভাবে করে করে সব জায়গায় তারা করেছে। নিউ মার্কেটে হাজার হাজার দোকান বসেছে। কীভাবে বসেছে, অনুমতি দেওয়া হয়নি? তারা বলে আমরা পয়সা দিয়ে বসেছি। কাকে পয়সা দেওয়া হয়? আওয়ামী লীগের সব নেতাদের পয়সা দিয়ে এভাবে দোকান বসেছে। কোনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম দেখার ব্যবস্থা নেই। আপনারা খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিএনপি!' বলেন মির্জা ফখরুল।

কিছু হলেই বিএনপি; উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, 'ব্যবসায়ীরা নিজেরাই বলে দিলো, আমরা নিজের চোখে দেখেছি সকাল সাড়ে ৫টার সময় সিটি করপোরেশনের পোশাক পরে কয়েকজন লোক এসেছে ফুট ওভারব্রিজ ভেঙে দেওয়ার জন্য। তারা ড্রিল দিয়ে লোহা কেটে দিচ্ছিল। তারা যখন ড্রিলের তার লাগাতে গিয়েছিল পয়েন্টে সেখানে শর্ট সার্কিট হয়েছে। তারা নিজেরা দেখেছে, বলেছে। তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছে। আগুন নেভাতে যখন পারেনি তখন ওই লোকগুলো পালিয়ে গেছে। এটা আমার কথা নয়, ওখানকার ব্যবসায়ীদের কথা।'

'সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে আছে এখন কে? আপনারা, আওয়ামী লীগ। দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের। আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। কোনো কিছু মনিটর করেন না। প্রতিদিন সবখানে আগুন লাগছে। এই আগুন লাগার পেছনে আপনারা আছেন। আপনারাই ডাইভার্ট করার জন্য; এই যে মানুষের দাবি উঠেছে সারের দাম কমাও, চালের দাম কমাতে হবে, আমাদের বাঁচতে দিতে হবে, ভালো নির্বাচন করতে দিতে হবে, ভোটের অধিকার দিতে হবে—এই দাবিগুলো পাশ কাটানোর জন্য, মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়ার জন্য  আপনারা আগুন লাগিয়ে যাচ্ছেন,' বলেন বিএনপি মহাসচিব।

এ সময় সারের দাম কমিয়ে ধানের দাম বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Vandalism, arson spread

Houses of Awami League leaders were attacked and torched, and murals and busts of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman were demolished and defaced in nearly two dozen districts yesterday.

7h ago