আমরা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবই: মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, 'আমরা এই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত করব। বিএনপি সারা দেশের মানুষকে জানিয়ে দিয়েছে, গণতন্ত্র, সংবিধানবিরোধী ও জনপ্রতিনিধিত্ববিহীন সরকার ক্ষমতায় আর থাকতে পারবে না। এই দেশে আমরা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবই।'
শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন আবদুল মঈন খান। সরকারের পদত্যাগসহ দশ দফা দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই পদযাত্রা করা হয়।
পদযাত্রায় যোগ দিতে বিকেলে খানপুর এলাকায় নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের সামনে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জড়ো হন। বিকেল সাড়ে চারটায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কের সস্তাপুর এলাকায় গিয়ে পদযাত্রা শেষ হয়। পদযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।
আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম ফারুক খোকন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান, কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান মনির, আজহারুল ইসলাম মান্নান, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব প্রমুখ।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মঈন খান বলেন, 'হাজার-হাজার নেতাকর্মী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে যারা এই পদযাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা এই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। বিএনপি সারা দেশের মানুষকে জানিয়ে দিয়েছে, গণতন্ত্র, সংবিধানবিরোধী ও জনপ্রতিনিধিত্ববিহীন সরকার ক্ষমতায় আর থাকতে পারবে না। এই দেশে আমরা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবই।'
তিনি বলেন, 'বিএনপি শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। তাই এই সরকারের উচিত পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আয়োজন করবে।'
'বিএনপি সরকারবিরোধী না, সরকারের অপকর্মের বিরোধী' মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, 'এই সরকার ভুল করছে, মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার করছে, তাই তাদের পরিবর্তন আমরা চাই। পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হলে এই দেশের মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে।'
এদিকে বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা এড়াতে জেলা জুড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান ছিল বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা। সকাল থেকে নগরীর মন্ডলপাড়া, ডিআইটি, দুই নম্বর গেট, চাষাঢ়া, খানপুর, চাঁদমারী, সস্তাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। শহরের চাষাঢ়ায় পুলিশের সাঁজোয়া যানও প্রস্তুত রাখা হয়।
চাইলাউ মারমা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা এড়াতে জেলা জুড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান ছিল। পোশাকি পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও ছিল। বিকেল পৌনে ছয়টা পর্যন্ত কোথাও কোন বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। এখনও বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।'
এদিকে সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জে জামায়াতে ইসলামী বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নিয়েছিল। বিকেল তিনটায় নগরীর ডিআইটি এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার কথা জানিয়েছিলেন দলটির নেতারা। তবে পরবর্তীতে 'প্রশাসন থেকে অনুমতি না পেয়ে' কর্মসূচি স্থগিত করে দলটি। জামায়াতের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ডিআইটি এলাকায় দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশকে সতর্ক থাকতে দেখা গেছে।
জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'আমরা পুলিশের কাছে বিক্ষোভ কর্মসূচির জন্য অনুমতি চেয়েছিলাম। ডিআইটি এলাকায় আমাদের মিছিল করার কথা ছিল। কিন্তু অনুমতি না পাওয়ায় কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।'
Comments