পরশুরামে উপজেলা আ. লীগ নেতাকে পিটিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৭
ফেনীর পরশুরামে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অনাদি রঞ্জন সাহাকে (৬৫) পিটিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি এখন ফেনী সদর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত অনাদি রঞ্জন সাহা পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই পরশুরাম মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে একজন দলীয় কর্মী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেলের কথা বলে মুঠোফোনে ডেকে অনাদি রঞ্জন সাহাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে যেতে বলেন। তিনি দলীয় কার্যালয়ের সামনে যাওয়া মাত্রই দুর্বৃত্তরা তাকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে জখম করেন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজনকে এগিয়ে আসতে দেখে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনী সদর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়ে। বর্তমানে তিনি ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় রাতে অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ (৩৫), রফিকুল ইসলাম (৫১), মোহাম্মদ ইব্রাহিম (৪৫), মোহাম্মদ এয়াকুব ওরফে ভুট্টু (৩৮), মিজানুর রহমান চৌধুরী (৪৪), জাহিদুল ইসলাম বাবু (২৮) ও আবদুল মান্নান (৩৪)। তাদের সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী এবং পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেলের সমর্থক বলে জানা গেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রঞ্জন সাহা বলেন, 'আমাকে উপজেলার সলিয়া এলাকার এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে বলেন- মেয়র (নিজাম উদ্দিন সাজেল চৌধুরী) দলীয় কার্যালয়ের সামনে ডাকছেন, অফিসে আসেন। খবর পেয়ে আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে গেলে লোহার রড় দিয়ে আমাকে পেটাতে থাকে। তারা মেয়রের সমর্থক। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনে।'
পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরএমও ডা. রবিউল ইসলাম বলেন, 'রঞ্জন সাহার পায়ের একাধিক স্থানে রডের আঘাত আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।'
পরশুরাম উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইয়াসিন শরীফ মজুমদার বলেন, 'হামলাকারী আনোয়ারকে সবাই পরশুরাম পৌরসভার মেয়র সাজেলের সহযোগী হিসেবে জানে।'
পরশুরাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, 'এ ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছে।'
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে পরশুরাম পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেলকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দলীয় কোন্দলকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে পরস্পরকে নানা বিষয়ে দোষারোপ করেন।
Comments