নির্বাচনী প্রচারণায় আব্দুস সাত্তার, পাশে বসালেন আ. লীগ নেতাদের

আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া, বিএনপি, আওয়ামী লীগ,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। পাকশিমুল ইউনিয়নে হাজী মকসুদ আলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সভায় তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেছেন বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা এবং সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা।

প্রতীক বরাদ্দের পর আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে মতবিনিময় সভা করেন তিনি।

স্থানীয় পাকশিমুল ইউনিয়নে তার নিজ গ্রাম পরমানন্দপুর হাজী মকসুদ আলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এই সভা করেন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া।

পাকশিমুল ইউনিয়নের পাঁচগ্রামের সচেতন নাগরিক ও সুধী সমাজের ব্যানারে আয়োজিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় ওয়ার্ড শাখা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজ খান। মঞ্চে স্থানীয় আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের একাধিক নেতা আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার সঙ্গে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মঞ্চে সাত্তার ভূঁইয়ার সাথে ছিলেন পাকশিমুল ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম এবং পার্শ্ববর্তী অরুয়াইল ইউনিয়ন শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব। এছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কুতুবুল আলম মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি থেকে এবং একই সাথে সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে দিয়ে আবারও উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পর থেকে সারাদেশে রাজনৈতিক আলোচনায় উঠে আসে আব্দুস সাত্তারের নাম। বিএনপি থেকে পাঁচ বারের সাবেক এই এমপি ও প্রতিমন্ত্রী ভোটে লড়তে মরিয়া হয়ে যাওয়ার পর তার নিজ নির্বাচনী এলাকার দুটো উপজেলাতেই (সরাইল ও আশুগঞ্জ) তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে নেতা-কর্মীরা। এরপর তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারও করা হয়।

এদিকে আওয়ামী লীগ এই আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থিতা উন্মুক্ত ঘোষণা করে। কিন্তু আব্দুস সাত্তার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের তিন নেতা তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। প্রশ্ন ওঠে বিএনপির সাবেক এই নেতাকে এই আসনটি আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিচ্ছে কিনা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপি থেকে পদত্যাগের পর গতকাল বুধবার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া প্রথম তার নির্বাচনী এলাকা আশুগঞ্জ উপজেলায় আসেন। সন্ধ্যার পর সেখান থেকে নৌকায় করে নিজ গ্রামে পৌঁছেন তিনি।

উল্লেখ্য, গেল বছরের ১১ ডিসেম্বর দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের পর ২৯ ডিসেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ ছাড়েন তিনি। এরপর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। পরে ৪ জানুয়ারি তার ছেলে মাঈনুল হোসেন ভূঁইয়া তুষার মনোনয়নপত্র সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এই উপনির্বাচনটিতে অংশ নিতে ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। পরদিন একজন প্রার্থী মারা যায় এবং ৮ জানুয়ারি যাচাই-বাছাইয়ের দিন চার জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। বৈধ ঘোষিত বাকি আট প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের তিন জন দলীয় সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে গত ১৪ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এরপর ১৮ জানুয়ারি গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে স্বেচ্ছায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান জাতীয় পার্টির দুই বারের সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা। এর ফলে বর্তমানে আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া ছাড়াও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ, জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আবদুল হামিদ ভাসানী এবং জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।

Comments