১০ ডিসেম্বর আমাদের নেতাকর্মীরা পাহারায় থাকবে: ওবায়দুল কাদের

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: স্টার

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া ও আমাদের অস্তিত্বের জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।

আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমি কারও অন্ধ সমর্থক নই। কাজ করে যারা, আমি তাদের পক্ষ কথা বলি। আমি নোয়াখালীর স্বার্থে, রাজনীতির স্বার্থে আমার ভাই আব্দুল কাদের মির্জা ও একরামুল করিম চৌধুরীকে ক্ষমা করে দিয়েছি। নোয়াখালী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একটি সাময়িক কাঠামো তৈরি হয়েছিল, নেত্রীর পরামর্শে সেটা সমাধান হয়েছে। নোয়াখালীতে আমি আওয়ামী লীগের কোনো কলহ দেখতে ও রাখতে চাই না। আমি কলহমুক্ত আওয়ামী লীগ চাই।' 

সেতুমন্ত্রী সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, 'আপনারা প্রস্তুত থাকুন। খেলা হবে, হবে খেলা। এই ডিসেম্বরে খেলা হবে, আগামী নির্বাচনে খেলা হবে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে, আন্দোলনে খেলা হবে, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে, টাকা চুরির বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে খেলা হবে।' 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'খেলা হবে স্লোগান মির্জা ফখরুলের পছন্দ নয়। আরও কারও কারও পছন্দ নয়। কিন্তু যে স্লোগান জনগণ পছন্দ করে, সেই স্লোগান আমি দিয়েই যাব। খেলা হবে।'  

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে কাদের আরও বলেন, 'আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপি নাকি রাজপথ ও ঢাকা দখল করবে। মির্জা ফখরুল, আমি বলতে চাই, আমাদের নেতাকর্মীরা মহানগর, জেলা, উপজেলা, ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লায় পাহারায় থাকবে। বিএনপি বিআরটিসির বাস পুড়িয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা-সিলেট সড়কে শেখ হাসিনার ভিত্তিপ্রস্তর রাতের অন্ধকারে পুড়িয়েছে। তারা আগুন, লাঠি নিয়ে আসবে, এজন্য তারা পার্টি অফিসে সমাবেশ করতে চায়। বিশাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ফখরুল বলেন খাঁচা।'  

দেশে লোডশেডিং হওয়ার কথা স্বীকার করে সেতুমন্ত্রী বলেন, 'এখন একটু লোডশেডিং হচ্ছে। মানুষ কষ্টে আছে। নেত্রীর চোখে ঘুম নেই। ফখরুলের জ্বালারে, অন্তর জ্বালা।

তিনি বলেন, 'রাজনীতিতে লেগে থাকলে পাওয়া যায়। যার উদাহরণ আমি নিজে। আমি নোয়াখালী কলেজ ছাত্রলীগের জিএস ছিলাম। তখন আমি মার খেয়েছি। চট্টগ্রাম বিভাগের ২ বারের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ফরিদপুর কারাগারে বন্ধী থাকা অবস্থায় আমি ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলাম। শেখ হাসিনার হাত ধরে আমি উঠতে উঠতে আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি। প্রধানমন্ত্রীর উছিলায় আমার জীবন পরিপূর্ণ হয়েছে। মরে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টায় সুচিকিৎসায় আমি প্রাণে বেঁচে গেছি। আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার কাছে কৃতজ্ঞ।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আল্লাহ যাকে বাঁচান তাকে কেউ মারতে পারে না। শেখ হাসিনাকে ২০ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পর শেখ হাসিনার মতো সৎ, সাহসী, কর্মঠ ও সাংগঠনিক নেতা আর একজনও দেখিনি। ২০০১ সালে স্বেচ্ছায় শেখ হাসিনা ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এমন সৎসাহস কোনো নেতার নেই। রাজনীতি আবেগ দিয়ে চলে না, বাস্তবতা দিয়ে রাজনীতি করতে হয়।'

সেসময় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'স্লোগান যদি দিতে হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে দিন।'

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'অনেক অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যদিয়ে বেড়ে উঠেছি। আজকে দেশ সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে উন্নয়নের সড়ক বেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে।'

সম্মেলনের উদ্বোধক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন না আসায় দুপুর ১২টার দিকে ওবায়দুল কাদের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

সম্মেলনে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। একাধিক প্রার্থী থাকায় আগামী ১৬ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটাগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, ফরিদুন নাহার লাইলি। এতে আরও বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলম, সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম, সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ, সংসদ সদস্য ফরিদা খানম সাকি, সংসদ সদস্য বেগম আয়েশা ফেরদৌস, অ্যাডভোকেট বশির উল্যাহ, অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন এবং পৌর মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English

Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

1h ago