না.গঞ্জে ককটেল বিস্ফোরণে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে ৩ মামলা, গ্রেপ্তার ৫
নাশকতার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের ৩ থানায় ৩টি মামলা করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও পেনাল কোডের বিভিন্ন ধারায় মামলাগুলো করা হয়। সদর, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা এসব মামলায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় জেলার পৃথক ৩টি স্থানে মশাল মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা ৩টি দায়ের করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
সদরের মামলায় ৪ জনকে ও ফতুল্লার মামলায় ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ জানায়, সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক আজহারুল ইসলাম ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলায় উপপরিদর্শক দেবাশীষ কুণ্ড ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনকে আসামি করেছেন। ফতুল্লা মডেল থানায় উপপরিদর্শক মফিজুল ইসলাম ২১ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন।
৩ মামলার বিবরণে পুলিশ উল্লেখ করেছে, বুধবার সন্ধ্যায় লাঠিসোটা, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মশাল মিছিল করে। পরে তারা সড়কে টায়ার পুড়িয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। তারা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য ৩টি স্থানেই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের অংশ, পোড়া টায়ার, মশাল মিছিলে ব্যবহৃত লাঠি ও টিনের কৌটা, গাড়ির কাঁচের ভাঙা অংশ উদ্ধারের কথাও মামলায় উল্লেখ করেছে পুলিশ।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বুধবার সন্ধ্যায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আলামত জব্দ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য ও প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে মামলা হয়েছে। মামলার আসামিরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।'
এই মামলায় গ্রেপ্তার ৪ জন হলেন শওকত হোসেন (৫০), হারুন অর রশীদ (৫০), হাসিবুল ইসলাম সাঈদ (৩৫) ও আশিকুল ইসলাম সাজিদ (৩২)।
এদিকে ফতুল্লা মডেল থানার মামলার ১ নম্বর আসামি বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মাদবরকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন ওই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোহসীন। আজ সন্ধ্যায় তাকে ফতুল্লা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানান থানার ওসি মশিউর রহমান।
৩ মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান খোকা, যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম টিটু, জেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর আব্দুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আরিফ ভূঁইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু, থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম হান্নান মামুন, মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য জুয়েল আরমান, বিএনপি নেতা ফারুক হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শাহেদ আহম্মেদ, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি জুয়েল রানা, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, ছাত্রদল নেতা লিংকন খান।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১২ দিনের ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জের ৭ থানায় পৃথক ৭ মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। ৭ মামলার ৪টিরই বাদী পুলিশ। ৩ মামলার ২টিতে ছাত্রলীগের ২ কর্মী এবং একটিতে শ্রমিক লীগের এক নেতা বাদী হয়েছেন। ৭ মামলার পর ১ দিনে ৩ থানায় বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে আরও ৩টি মামলা করল পুলিশ।
Comments