নাজিরপুরে আ. লীগের সম্মেলনে ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ২০

সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: স্টার

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ২ পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকারি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা মহাবিদ্যালয় মাঠে সম্মেলনের স্থলে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা আউয়ালপন্থী মো. মোশারেফ হোসেন খানকে সভাপতি এবং আশুতোষ বেপারীকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেন।

মেয়াদ উত্তীর্ণের ৫ বছর পর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন।

দুপুরে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম এ আউয়াল। এ ছাড়া, সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান মালেক এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

সকাল থেকেই শ ম রেজাউল করিমের অনুসারীরা সভাস্থলে অংশ নেন এবং মাঠের একটি বড় অংশ তাদের দখলে ছিল। এরপর শ ম রেজাউল করিমসহ বিভিন্ন জনের নামে নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে শুরু করলে প্রধান অতিথির হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভার শুরু থেকেই ২ পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সমাবেশে নেতাকর্মীরা কাঠের হাতলযুক্ত প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এরপর কলেজের মধ্যে দ্বিতীয় অধিবেশন চলাকালে ২ পক্ষের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

শ ম রেজাউল করিমের ছোট ভাই নুরে আলম সিদ্দিকী শাহীন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ২ পক্ষের পাল্টাপাল্টি স্লোগানের সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তাদের ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং অন্যদের নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

কর্মীদের কাছ থেকে একটি গুলি করার খবর শুনেছেন। তবে বিষয়টি তিনি নিশ্চিত নন বলেও জানান শাহীন।

এদিকে, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান খালেক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। তবে এ সিদ্ধান্ত মানতে রাজি হননি মন্ত্রী রেজাউল করিমের সমর্থকরা। এরপরই বাইরে তারা মিছিল শুরু করেন। একপর্যায় তারা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ৭-৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।'

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, নাজিরপুরে সম্মেলনে সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটলেও সেখানে গুলি ছোড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

৮ বছর আগে ২০১৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে এম এ মালেক বেপারীকে সভাপতি এবং মো. মোশারেফ হোসেন খানকে সাধারণ  সম্পাদক করে ৬৭ সদস্যবিশিষ্ট নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর মালেক বেপারীর মৃত্যুর পর সভাপতির পদটি শূন্য ছিল। এরপর আজ ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s order and deadly aftermath

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

9h ago