মৌলভীবাজার: পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে যাত্রীদের ভোগান্তিও শুরু
সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে আজ শুক্রবার সকাল থেকে মৌলভীবাজারে শুরু হওয়া পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা।
প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়ে গন্তব্যে যেতে না পেরে বাসস্ট্যান্ড থেকে ফিরে আসছেন অনেকে। আবার বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টায় নাভিশ্বাস উঠছে কারও কারও।
অটোরিকশা নিবন্ধন বন্ধ ও জেলা সদরে স্থায়ী একটি ট্রাকস্ট্যান্ড নির্মাণের দাবিতে বুধবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার বাস-মিনিবাস ও ট্রাক কর্ভাডভ্যান মালিক সমিতি ঐক্য পরিষদের নেতারা এ ধর্মঘটের ঘোষণা দেন।
আজ সারাদিন ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে। এই ধর্মঘটের আওতায় আজ সকাল থেকেই মৌলভীবাজার থেকে আন্তঃজেলাসহ দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ আছে। চলছে না কোনো ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান।
সকালে কুলাউড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কথা হয় ৭০ বছর বয়সী হাসনা বেগমের সঙ্গে। তার বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিনভাগ গ্রাম।
হাসনা বেগম জানান ভোরবেলা নামাজ পড়ে আরও ২ আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে অসুস্থ বোনকে দেখতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। বাস বন্ধ থাকায় দ্বিগুন ভাড়া দিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কুড়াউড়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছান তারা। এখানেও বাস না পেয়ে তারা এখন ট্রেনে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
হাসনা বেগম বলেন, 'জুম্মাবারে হরতাল হয় এইটা প্রথম দেখলাম।'
আরেক যাত্রী সাদ্দাম হোসেনের ভাষ্য, সকালে ভ্যানে চড়ে তারা ৭ জন ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে এসে জানতে পারেন যে ঢাকাগামী বাস চলাচলও বন্ধ। তিনি বলেন, 'আগে জানতাম বিরোধী দল হরতাল দেয়। এখন দেখি সরকারি দলও গাড়িঘোড়া বন্ধ করি দেয়।'
সকাল ৮টার দিকে মৌলভীবাজার বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় মাহিদুল ইসলাম নামের এক পোশাকশ্রমিকের সঙ্গে। ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন তিনি। শনিবার কাজে যোগ দেওয়ার কথা তার।
মাহিদুল বলেন, 'এভাবে গাড়ি বন্ধ করে মানুষকে কষ্টের মধ্যে ফেলার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। যেভাবেই হোক আমাকে আজকের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাতে হবে। কিন্তু কীভাবে যাবো সেটা এখনো জানি না।'
এর আগে বিএনপির ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদুপরে বিভাগীয় গণসমাবেশের আগেও সেখানকার পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা বাস ধর্মঘটের ডাক দেন। বরিশালে বন্ধ করে দেওয়া হয় লঞ্চ চলাচল। এতে গণসমাবেশমুখী নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
Comments