সবাই গ্রামে ফিরে যান, নিজ হাতে চাষ করেন: যুবলীগের উদ্দেশে শেখ হাসিনা

যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

যুবলীগের নেতাকর্মীদের গ্রামে ফিরে গিয়ে নিজ হাতে চাষাবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। 

আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান তিনি। 

সেসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের পরনির্ভরশীল থাকলে চলবে না, আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। তাই আমি আহ্বান করছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।'

তিনি বলেন, 'আমি করোনার সময় আহ্বান করেছিলাম, কৃষক ধান কাটতে পারেনি, তারপর যুবলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে। এরপর আমি আহ্বান করেছি, যুবলীগ বৃক্ষরোপণ করেছে। এভাবে মানুষের পাশে আমাদের এখনো দাঁড়াতে হবে।'

যুবলীগের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি যুবলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে বলব, যারা এখানে আছেন বা বাইরে আছেন, সবাই নিজের গ্রামে ফিরে যান, সেখানে গিয়ে কোনো জমিজমা অনাবাদী না রেখে, সেটা নিজের হাতে চাষ করতে হবে। কোথাও কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে সেই ব্যবস্থা প্রতিটি যুবলীগ নেতাকর্মীর করতে হবে।'

বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী যুবলীগকে সুবর্ণজয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানান, যুবলীগের নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানান।

এরপর তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা, জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যুবলীগ আমাদের প্রতিটি আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। জাতির পিতা যুবকদের দায়িত্ব দিতে যুবলীগ গঠন করেছিলেন।'

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। আজ আমরা আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রাথমিকের বাচ্চাদের শিক্ষা দিচ্ছি। আমরা বাংলাদেশে হাইটেক পার্ক সফটওয়্যার টেকনোলোজি পার্ক গড়ে তুলছি।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'আমাদের যুবকরা ট্রেনিং নিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে। এই সুযোগ আওয়ামী লীগ না এলে জীবনেও হতো না।'

'এইট পাস দিয়ে আর মেট্রিক ফেল দিয়ে দেশ চললে, সেই দেশের উন্নতি হয় না,' যোগ করেন তিনি।

তরুণ সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'তরুণ সমাজের দায়িত্ব দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। যুবলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।'

'এত ঘাত-প্রতিঘাতের পরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে' উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি আজকে রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে। ৯৬ সালে আমি যখন নির্বাচন করলাম, ঠিক তার আগে বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। রিজার্ভ ছিল ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেখানে আমরা ৪৮ বিলিয়ন পর্যন্ত নিয়েছিলাম।'

'আজ রিজার্ভ আমাদের কাজে লাগছে, কারণ আমরা করোনার টিকা দিয়েছি। আমাদের খাবার তেল সবকিছু বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে। তারপর দুই বছর পর যখন বিশ্ব উন্মুক্ত হয়েছে, তখন ক্যাপিটাল ম্যাশিনারিজ এসেছে। আমাদের রিজার্ভ তো ব্যবহার করতেই হবে। আট বিলিয়ন আমরা আলাদাভাবে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছি। রিজার্ভ জমিয়ে রাখলে তো হবে না। সে টাকা কাজে লাগাতে হবে,' যোগ করেন তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আজ আমরা আমাদের নিজেদের টাকায় বিমান কিনেছি। আমরা পায়রা নদীর ড্রেজিং নিজেদের অর্থায়নে করছি। নইলে এই টাকা বিদেশি ব্যাংক থেকে নিতে হবে। সেই টাকা সুদসহ ফেরত দিতে হবে। আজকে আমরা নিজের ব্যাংক থেকে এই টাকা নিয়েছি। নিজেদের রিজার্ভ ব্যবহার করছি। এতে ঘরের টাকা ঘরে থাকছে।'

'অর্থনীতিকে গতিশীল করাই আমাদের লক্ষ্য' উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা ক্ষমতায় ছিল, দুর্নীতি-লুটপাট করে তারা এখন ষড়যন্ত্র করছে।'

'আমার কথা বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Ending impunity for crimes against journalists

Though the signals are mixed we still hope that the media in Bangladesh will see a new dawn.

8h ago