বিএনপি নেতাকর্মীদের শ্লোগানে মাঝরাতে মুখর বঙ্গবন্ধু উদ্যান

বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিএনপির নেতাকর্মীতে ভরপুর বঙ্গবন্ধু উদ্যান। ছবি: টিটু দাস/স্টার

বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালীসহ বরিশালের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা বিএনপির হাজারো নেতাকর্মী অবস্থান নিয়েছেন বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে। এখানেই আগামী ৫ নভেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ।

উদ্যানের গাছের নিচে অনেকে ত্রিপল টাঙিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। কেউ কেউ ব্যাগে করে জামা কাপড় নিয়ে এসেছেন। উদ্যান থেকে মাঝে মাঝে মিছিল বের করছেন নেতাকর্মীরা। মিছিল উদ্যান ছাড়িয়ে পাশের সড়ক পার হয়ে লঞ্চঘাট পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করছে। 

অনেকেই ব্যানার নিয়ে এসেছেন। অনেকেই আবার ফেসবুক লাইভ করে এলাকায় জানান দিচ্ছেন নিজ অবস্থান।

আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানের চিত্র এমনই ছিল।

উদ্যানের একপাশে নেতাকর্মীদের খাওয়া দাওয়ার জন্য চলছে রান্নাবান্না। বিদ্যুৎ সুবিধার দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছে জেনারেটরসহ গাড়ি। উদ্যানের ভেতরেই অনেকে দোকান সাজিয়ে বেচাকেনা শুরু করেছেন। 

আশেপাশের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে বিএনপি কর্মীদের ভিড় উপচে পড়ছে। এসব রেস্তোরাঁ সারারাত খোলা থাকবে বলে মালিকরা জানান।

নেতাকর্মীরা মিছিল-শ্লোগানে উদ্যান মাতিয়ে রাখছেন। জনসভাস্থলে আগেই আসতে পেরে অনেকেই কিছুটা স্বস্তিতে আছেন। 

নেতাকর্মীদের খাওয়াদাওয়ার জন্য উদ্যানের একপাশে রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছবি: টিটু দাস/স্টার

অন্যান্য জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা জানান, তারা যেকোনো মূল্যে জনসভায় যোগ দিতে জীবনবাজি রেখে এসেছেন। অনেকেই পথে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের হয়রানি-হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

ভোলার দৌলতখান থেকে আসা মোস্তফা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বাধা পেয়ে তিনি বিকল্প পথে বরিশাল এসে পৌঁছেছেন। 

বরিশালের উজিরপুর থেকে মোস্তাফিজ রাত ৯টায় এসে পৌঁছেছেন বঙ্গবন্ধু উদ্যানে। তার মতো হাজারো বিএনপি কর্মীদের উপস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু উদ্যান প্রস্তুত হচ্ছে ৫ নভেম্বরের বিভাগীয় সমাবেশের জন্য।

স্থানীয় মাইক্রো বাসচালক ফরিদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, রাত ১২টার পর থেকে নগরীতে কোনো মাইক্রোবাস ঢুকতে বা বের হতে দেওয়া হবে না। 

উদ্যানের ভেতরেই অনেকে দোকান সাজিয়ে বেচাকেনা শুরু করেছেন। ছবি: টিটু দাস/স্টার

এতে সড়ক পথ বন্ধ থাকায় এবং ভোলা-বরিশাল লঞ্চ বন্ধ থাকায় বরিশাল কার্যত বিচ্ছিন্ন নগরীতে পরিণত হতে পারে। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাধা দিয়ে সমাবেশে লোক আসা ঠেকানো যাবে না।'

বিএনপি কর্মীদের একটি সূত্র জানায়, কীর্তনখোলার বিভিন্ন তীরে কয়েক শত ট্রলার অবস্থান করছে। এসব ট্রলারে ১২-১৫ হাজার মানুষ নগরীতে ঢোকার অপেক্ষায় আছে। এ ছাড়া বরিশালের বিএনপি কর্মীদের বাড়ি হয়ে উঠেছে যেন নেতাকর্মীদের আশ্রয়কেন্দ্র।

বিদ্যুৎ সুবিধার দেওয়ার জন্য উদ্যানে দাঁড়িয়ে আছে জেনারেটরসহ গাড়ি। ছবি: টিটু দাস/স্টার

স্থানীয়রা জানান, বিএনপির সমাবেশের কারণে বরিশাল নগরীতে গত কয়েকদিন ধরে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন। সন্ধ্যায় রাস্তায় হাঁটাচলা কঠিন হয়ে পড়ছে, যানজট দেখা দিচ্ছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিএনপি কর্মীদের জটলা দেখা গেছে গভীর রাত পর্যন্ত। 

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রলীগ বরিশাল নগরীতে মিছিল করেছে। মিছিলটি বিএনপি অফিস অতিক্রম করার সময় পুলিশ চারিদিক থেকে ঘিরে রাখে।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কেম জাহাঙ্গীর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগামী ১১ নভেম্বর যুবলীগের সুবর্ণ জয়ন্তীর সাফল্য কামনা করে আমরা মিছিল করছি নগরীতে। বিএনপির জনসভা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই।'

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

2h ago