‘পিরোজপুরে হামলা-মামলায় অতিষ্ঠ বিএনপি নেতাকর্মীরা’
সম্প্রতি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পিরোজপুরে হামলা আর মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার বিকেলে পিরোজপুর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলু এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে গাজী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের উপস্থিতিতেই নাজিরপুরে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকে নেতাকর্মীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে কমপক্ষে শতাধিক নেতাকর্মীদের আহত করে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি কার্যালয়টি ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান দুলালের ওপর থানার গেটের সামনে পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর উল্টো বিএনপির ৩০০ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা আওয়ামী লীগ মামলা করে।'
বিএনপির এ নেতা আরও অভিযোগ করেন, 'গত ৩১ আগস্ট নেছারাবাদ উপজেলায় বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে যাওয়ার সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের বহনকারী বেশ কয়েকটি ট্রলারে হামলা চালিয়ে তাদের অর্ধশত নেতাকর্মীদের আহত করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া, বিভিন্ন সময় পুলিশের সামনে তাদের জেলা কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থাই নেয় না।'
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আলমগীর হোসেন অভিযোগ করেন, 'মঠবাড়িয়া উপজেলায় সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে বাধা দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এজন্য বিভিন্ন রুটে গাড়ি চলাচল পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভান্ডারিয়া উপজেলায়ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে তাদেরকে আহত করা হয়েছে।'
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মুইদুল ইসলাম মুহিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট নির্দেশনা আছে যে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনে বাধা দেওয়া যাবেনা। কিন্তু নেছারাবাদে বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে অপ্রীতিকর শ্লোগানসহ ট্রলারযোগে কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের কাছে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। ভবিষ্যতে এরকম হবে না বলে তারা আশ্বস্ত করলে, আওয়ামী লীগ নেতারা সেখান থেকে চলে আসেন।'
তবে বিএনপির একাধিক গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে মারামারির ঘটনা ঘটে এবং ওই ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই জড়িত নয় বলে দাবি করেন মুহিদ।
নাজিরপুরে পুলিশের সামনে বিএনপি নেতার ওপর হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, 'ঘটনার দিন আওয়ামী লীগের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিএনপির লোকজন বোমা ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। তবে এ ঘটনার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে, আমরা তাদের নিরাপদে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সহযোগিতা করি।'
Comments