‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী দলের কেউ না, আ. লীগের বিব্রত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না’

aabdur-rhmaan.jpg
ছবি: সংগৃহীত

গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগের কেউ নন। সুতরাং তার বক্তব্যে দলের বিব্রত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

জাতীয় শোক দিবসকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

আব্দুর রহমান বলেন, এর ব্যাখ্যাটি তিনিই ভালো দিতে পারবেন। কারণ মিডিয়াতে তার বক্তব্য যেভাবে এসেছে, সে ব্যাপারে তার কথা থাকতে পারে। যদি ধরেই নিই, মিডিয়াতে যে কথাটি এসেছে, সেই কথাটিই তিনি বলেছেন, তাহলে আমি দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলি—এটি আমাদের দলের কোনো কথা না। আমাদের দল সব সময় মনে করে, ভারত আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ট বন্ধু। তারা আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের অবদান আমরা কোনো অবস্থাতেই ভুলতে পারবো না। কিন্তু তার অর্থ এই না, যে দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ দেশের মাটি-মানুষের ভেতর দিয়ে গড়ে উঠেছে, বড় হয়েছে এবং এই দলের দীর্ঘ দিনের একটা সংগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য রয়েছে। সেই দল কখনোই কোনো বিদেশি শক্তি নির্ভর ক্ষমতায় যাওয়া ও ক্ষমতায় টিকে থাকার নীতিতে বিশ্বাস করে না। এই দল সেটি আশাও করে না।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে আওয়ামী লীগ বিব্রত কি না জানতে চাইলে আব্দুর রহমান বলেন, তিনি তো আমাদের দলের কেউ না আসলে। সুতরাং তার এই বক্তব্যে আমাদের দলের বিব্রত হওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তবে অনুরোধ করবো তাকে যে, তার কথা-বার্তায় এবং তার দায়িত্ব আচরণের ভেতর দিয়ে এমন কিছু বলবেন না, যাতে কোনো দুষ্ট লোকেরা এর সুযোগ নিতে পারে। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। সে ব্যাপারে তিনি সতর্ক থাকবেন, এতটুকুই তার কাছে আমাদের বক্তব্য।

আব্দুল মোমেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করা হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমরা বলেছি। তিনি যেহেতু প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার সদস্য, সুতরাং এই বিষয়টি তিনিই দেখভাল করবেন বলে আমরা আশা করি।

সম্প্রতি আরও বেশ কিছু বিষয়ে তার বক্তব্য সমালোচনার মুখে পড়েছে। সে বিষয়ে আব্দুর রহমান বলেন, বেহেশতের কথাটা উনি বলেছেন যে, আজকের বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখনো সহনশীল আছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে এখনো বাংলাদেশ সেই ধরনের সংকটে পড়েনি। যে সংকটের কথা আজকে বিশেষ করে বিরোধী রাজনৈতিক অশুভ শক্তিরা বলে বেড়াচ্ছে; এই দেশ দেউলিয়া হবে। এই ধরনের কোনো আশঙ্কা না করার কথাই তিনি বুঝিয়েছেন। হয়তো তার উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে।

তার বক্তব্যের প্রভাব বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ওপর পড়ছে কি না সে বিষয়ে মত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়েছি। মুখপাত্র বা দলের দায়িত্বশীল নেতারা যে অবস্থানের কথা বলবেন, আমাদের রাজনৈতিক যে অঙ্গীকার-দর্শন সেই কথা তারা বিশ্বাস করবে নাকি মন্ত্রিসভার একজন সদস্য বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে একটা কথা বলেছেন; সেটা আমাদের দলের সিদ্ধান্তের কথা না, সুতরাং আমাদের ভুল বোঝার কোনো কারণ নেই।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে এবং আমাদের দেশ সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। সেজন্য শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করার, আমি ভারত সরকারকে সেটা করার অনুরোধ করেছি।

Comments

The Daily Star  | English

$14b lost to capital flight a year during AL years

Bangladesh has lost around $14 billion a year on average to capital flight during the Awami League’s 15-year tenure, according to the draft report of the committee preparing a white paper on the economy.

10h ago