৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত কোটি টাকার ট্রমা সেন্টার

ছবি: স্টার

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার শোলঘরে ২০ শয্যার একটি ট্রমা সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার সাত বছর পরও চালু হয়নি এ হাসপাতাল।

২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিনতলার ট্রমা সেন্টারটি বর্তমানে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির দেয়ালের আস্তর উঠে গেছে, মেঝেতে শ্যাওলা জমেছে, লোহার কাঠামোতে মরিচা ধরেছে এবং ভবনের চারপাশ ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। চুরি হয়ে গেছে বৈদ্যুতিক ও স্যানিটারি সরঞ্জাম। জানালার কাঁচগুলোও ভাঙা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থাপনাটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই জায়গাটা তো জীবন বাঁচানোর জন্য বানানো হয়েছিল। এখন এটা আমাদের আতঙ্কের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।'

২০০৪ সাল থেকে সরকারি উদ্যোগে সারাদেশে এরকম ২১টি ট্রমা সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় সবগুলোই এ মুহূর্তে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র।

১৪ জন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্সসহ প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ন্যূনতম ৩৪টি পদ বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এসব পদে আজ পর্যন্ত কোনো নিয়োগ হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাসপাতালে কোনো সরঞ্জামও দেওয়া হয়নি।

মুন্সীগঞ্জ গণপূর্ত অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী বরুণ কুমার বিশ্বাস বলেন, 'বছরের পর বছর অবহেলায় পড়ে থাকায় ভবনের অনেক কিছুই নষ্ট হয়ে গেছে। ভবন মেরামতের জন্য ৫৯ লাখ টাকা ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির জন্য ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় কেবল ২০ লাখ টাকার অনুমোদন দিয়েছে। এত অল্প টাকায় ভবনটির মেরামত সম্ভব না, আমরা পুরো টাকা বরাদ্দ চেয়ে আবার চিঠি দিয়েছি।'

মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুরুল আলম জানান, 'গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে কয়েকবার ভবনটি হস্তান্তরের চিঠি দিলেও সেন্টারটির পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো ও উপকরণ না থাকায় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আমরা ভবনটি হস্তান্তর করে নিতে পারিনি।'

'এছাড়া ভবন হস্তান্তর করা হলেই সঙ্গে সঙ্গে ট্রমা সেন্টার চালু করা সম্ভব না। কারণ, এতে জনবল নিয়োগ করতে হবে। আনুষঙ্গিক অনেক ব্যাপারও আছে। আমরা জেনেছি নতুন করে ভবন মেরামতের জন্য গণপূর্ত যে আর্থিক বরাদ্দ চেয়েছিল, তার অনুমোদন হয়নি। সবদিক থেকে বলা যায়, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ট্রমা সেন্টার চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus, Tarique will decide what they'll discuss, says Shafiqul

The CA's press secretary says there is no specific format for the meeting but anything, including the current political situation, election timeline announced by the chief adviser, reforms, and July Charter can be discussed

3h ago