চামড়ার দাম না পেয়ে হতাশ রংপুরের মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

কুড়িগ্রামের থানাহাটে চামড়া কিনছে মৌসুমি ব্যবসায়ী। ছবি: এস দিলীপ রায়

চামড়ার ভালো দাম না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন রংপুর বিভাগের মৌসুমি কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, পাইকারের অভাব, সরকারি দামের সঙ্গে বাজার মূল্যের মিল নেই। তাই সংরক্ষণের বাড়তি খরচে লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বুড়িরহাট এলাকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম তিন লাখ টাকা ঋণ নিয়ে গরু ও ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করেন। গরুর চামড়া কেনেন প্রতি পিস ১০০ থেকে ২০০ টাকায়, আর ছাগলের চামড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

তবে প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষণে গরুর চামড়ায় খরচ হয়েছে প্রায় ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা এবং ছাগলের ক্ষেত্রে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।

তিনি বলেন, 'কিন্তু পাইকারদের কাছে গিয়ে দাম পাচ্ছি না।'

একই কথা বলেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ী সিরাজুল হক।

তার ভাষ্য, 'সরকার যে মূল্য নির্ধারণ করেছে, বাজারে তার অর্ধেক দাম কেউ দিচ্ছে না। ফলে চামড়া জমিয়ে রাখতে হচ্ছে, এতে সংরক্ষণ খরচ বাড়ছে।'

লালমনিরহাট শহরের আলোরুপা এলাকার জাহিদ খান জানান, তিনি প্রায় ১৫ লাখ টাকার চামড়া কিনেছেন, যার মধ্যে ১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন।

'চামড়া কম দামে কিনে ভেবেছিলাম কিছু লাভ হবে। কিন্তু এখন দাম না পেয়ে লোকসানের আশঙ্কায় আছি। সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে বড় লোকসান হবে,' বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের এলাকায় কোনো ট্যানারি নেই। বিক্রির জন্য পাইকারদের ওপর নির্ভর করি।'

নীলফামারীর সৈয়দপুর এলাকার চামড়ার পাইকার সোলেমান খান বলেন, 'আমরা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কিনছি। কিন্তু অনেকেই চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারেননি। তাই সরকারি দরে কেনা সম্ভব হচ্ছে না। আলোচনার মাধ্যমে আমরা যৌক্তিক মূল্য দিচ্ছি।'

তিনি দাবি করেন, 'যেহেতু মৌসুমি ব্যবসায়ীরা অনেক কম দামে চামড়া কিনেছেন, তাই লোকসান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।'

রংপুর বিভাগে প্রায় তিন হাজার মৌসুমি কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী আছেন। পাইকারের সংখ্যা ২০০ জনের বেশি।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঈদুল আজহায় রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রায় ১৪ লাখ পশু কোরবানি হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ গরু এবং বাকি ৩০ শতাংশ ছাগল, ভেড়া ও মহিষসহ অন্যান্য পশু।

রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল হাই সরকার বলেন, 'বিভিন্ন এলাকায় মানুষ চামড়া বিক্রি করতে না পেরে স্থানীয় মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দান করেছেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এবার খুব কম দামে চামড়া কিনলেও বিক্রি করতে পারছেন না।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh RMG sector

RMG sector on edge as tariff talks make no headway

The diverging outcomes threaten to create a multi-tiered tariff landscape in Asia, placing nations like Bangladesh at a serious disadvantage in the US market.

12h ago