উপদেষ্টাদের সঙ্গে সাক্ষাতেও সমাধান হয়নি, কঠোর আন্দোলনে যেতে পারেন সচিবালয় কর্মচারীরা

সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ সংশোধন করে শাস্তির বিধান আরও কঠোর করতে নতুন অধ্যাদেশ বাতিলের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের পরিকল্পনা করছে সচিবালয় কর্মচারীরা।
আজ রোববার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও বিষয়টির সুরাহা না হওয়ায় কর্মচারীরা এ চিন্তা করছে।
সচিবালয় আন্তঃমন্ত্রণালয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ কথা জানান।
দ্বিতীয় দিনের মতো আজ সচিবালয়ে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়নের উদ্যোগ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা।
সকাল থেকে বিকেল দেড়টা পর্যন্ত বিক্ষোভের পর গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে দেখা করেন কর্মচারীরা।
এরপর আন্তঃমন্ত্রণালয় পরিষদ নেতা নজরুল জানান, বৈঠকে সমাধান আসেনি। বিকেলে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করবেন।
তিনি জানান, গণপূর্ত উপদেষ্টা কর্মচারীদের বলেছেন যে, বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারা এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। আলোচনায় হয়ত সমাধানের কোনো পথ তৈরি হতে পারে।
এর আগে, আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের সামনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হন। পরে কয়েকশ কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ করেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অধ্যাদেশের খসড়ায় শৃঙ্খলা বিঘ্ন, কর্তব্য সম্পাদনে বাধা, ছুটি ছাড়া কর্মে অনুপস্থিত, কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানির জন্য কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চাকরিচ্যুতির বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হলেও খসড়াটি পর্যালোচনার জন্য চারজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান এবং গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোনো কর্মচারীর অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে অন্তত সাত থেকে আটটি ধাপ পার করতে হয়। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আগে বিভিন্ন তদবিরে শাস্তি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এদিকে, সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত বা সুপারিশ দিতে সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে।
রোববার কমিটি পুনর্গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
দশ সদস্যের পুনর্গঠিত কমিটির সভাপতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব।
কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা-১ অধিশাখা, যুগ্ম-সচিব (বিধি-১ অধিশাখা), যুগ্ম-সচিব (মাঠ প্রশাসন, অভ্যন্তরীণ নিয়োগ ও নব-নিয়োগ অধিশাখা), যুগ্ম-সচিব (প্রশাসন অধি-শাখা), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন প্রতিনিধি, অর্থ বিভাগের একজন প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের একজন প্রতিনিধি।
Comments