পহেলা বৈশাখ ঘিরে পটুয়াখালীর মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ত সময়

পটুয়াখালী
ছবি: সোহরাব হোসেন/ স্টার

বাংলা নবববর্ষকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফলের মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এবারের বৈশাখে এখানকার ব্যবসায়ীরা কোটি টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন।

পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে বাউফল উপজেলার চারটি গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত। মৃৎশিল্পী ও ব্যবসায়ীরা জানান, বছরব্যাপী তাদের তৈরি বাহারি পণ্য বিক্রি হলেও পহেলা বৈশাখে এসব পণ্য বেশি বিক্রি হয়। তাই এই উৎসবকে কেন্দ্র করে কোটি টাকার মাটির তৈরি পণ্যের বিক্রির আশা তাদের।

ছবি: সোহরাব হোসেন/ স্টার

বাউফলের কনকদিয়া, বগা, মদনপুর ও বিলবিলাস গ্রামে সাত-আটজন কারিগর ও ব্যবসায়ীর অধীনে মৃৎশিল্পীরা মাটির বিভিন্ন গৃহস্থালি ও গৃহসজ্জাসামগ্রী তৈরি করে থাকেন। অপেক্ষাকৃত শক্ত 'এঁটেল মাটি' দিয়ে এসব পণ্য তৈরি করা হয়। মৃৎশিল্পীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে কাজ করেন। কেউ মাটি দিয়ে পণ্য তৈরি করেন, কেউ রং করেন, কেউ রোদে শুকান, আবার কেউ প্যাকেজিং করেন।

গত প্রায় ৫০ বছরে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী এখানকার পাল সম্প্রদায় তাদের পণ্যে নানান বৈচিত্র্য এনেছে।

এই শিল্পের অন্যতম প্রবীণ কারিগর বরুণ পাল বলেন, 'শুরুতে কেবল হাড়ি-পাতিল ও খেলনা তৈরি করা হতো। এখন ক্রেতাদের রুচি ও চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে মাটির তৈরি ডিনার সেটের। ১৬ পিসের একটি সেট আড়াই থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হয়।'

তিনি আরও জানান, দেশের বিভিন্ন নামকরা প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডগুলো এখানে তৈরি পণ্য সংগ্রহ করে সারাদেশে বাজারজাত করে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এখানকার পণ্য বিদেশেও বিক্রি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সৌদি আরব, বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতারা সরাসরি গ্রামে এসেও পণ্য কিনে নেন।

আরেক মৃৎশিল্পী কমল পাল জানান, বৈশাখী মেলার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব পণ্যের প্রচুর চাহিদা থাকে।

তিনি বলেন, 'সরকারের পৃষ্টপোষকতাসহ ব্যাংক ঋণ ও অন্যান্য সুবিধা সহজে পাওয়া গেলে এই শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।'

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী বিসিকের উপ-সহকারি মহাব্যবস্থাপক মো. আল আমিন বলেন, 'বাউফলের মৃৎশিল্পীদের আমরা প্রশিক্ষণসহ স্বল্পসুদে ঋণ দিয়ে থাকি। করোনাকলীন আমরা ওখানকার মৃৎশিল্পীদের প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ দিয়েছি। তাছাড়াও তাদের পণ্যের বিভিন্ন ডিজাইন করে দিই। তাদের পণ্যটিকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃত দেওয়ার চেষ্টাও করা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Apparel Buyers Delay Price Increases Post-Wage Hike Promise

Garment exports to US grow 17%

Bangladesh shipped apparels worth $5.74 billion in the July-March period to the USA

8h ago