গাজা গণহত্যার প্রতিবাদ: শিক্ষার্থীদের ‘ডাবল অ্যাবসেন্টের’ হুমকি, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক বরখাস্ত

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ডাকা কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নিলে 'ডাবল অ্যাবসেন্ট' দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) এক প্রভাষক। 

পরে ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে আজ সোমবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু ড্যাফোডিলের জার্নালিজম, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রভাষক তাহমিনা রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, যারা বিক্ষোভে অংশ নেবেন, তাদের 'ডাবল অ্যাবসেন্ট' করে দেবেন।

ডিআইইউর মুখপাত্র ও এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, 'তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে তাহমিনা রহমানকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে তাকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হবে।'

মিজানুর রহমান জানান, 'তাহমিনা হোয়াটস্যাপ গ্রুপে শিক্ষার্থীদের বলছেন যে গাজার গণহত্যার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ক্লাসে না এলে ডাবল অ্যাবসেন্ট দেবেন। প্রথমত বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছে, সেখানে তিনি আলাদা করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন না। আবার ক্লাস উপস্থিতি যদি কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েই থাকেন, তাহলে সর্বোচ্চ একটি উপস্থিতি কাটতে পারবেন। ডাবল অ্যাবসেন্ট দেওয়ার যে হুমকি তিনি শিক্ষার্থীদের দিয়েছেন, তা নিয়মবহির্ভূত।'

এর বাইরে সেই গ্রুপে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি যে ভাষায় কথা বলেছেন এবং যেসব শব্দ ব্যবহার করেছেন, তা একজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রভাষক হিসেবে শোভনীয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবহির্ভূত এসব আচারণের কারণেই তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র।

এর আগে, রোববার সারাবিশ্ব এবং দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরাও 'নো ওয়ার্ক, নো স্কুল' পালনের সিদ্ধান্ত নেন। সে হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা সোমবার ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নিলে প্রভাষক তাহমিনা তাদের ডাবল অ্যাবসেন্ট দেয়ার হুমকি দেন এবং গাজার প্রতি সংহতি জানানো এসব কর্মসূচি নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন তিনি।

তার হোয়াটসঅ্যাপের স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে এই শিক্ষিকাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির সঙ্গে তারা একাত্মতা ঘোষণা করেছেন আগেই। কেন এই শিক্ষিকা এমন আচারণ করলেন তা খতিয়ে দেখা হবে?

ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে তাহমিনা নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চান। বলেন, 'তিনি অনলাইন ক্লাস নিতে চেয়েছিলেন। কর্মসূচির পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা চাইলে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারতো। পুরো ঘটনাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেন এ প্রভাষক।'

Comments

The Daily Star  | English

Govt forms committee to probe last 3 polls

Former High Court justice Shamim Hasnain has been made the chairman of the committee

25m ago