ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভ: হামলার অভিযোগে ১২ জনের নামে পুলিশের মামলা

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্লাটফর্ম সদস্যদের। ছবি: আনিসুর রহমান/স্টার

ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্লাটফর্ম সদস্যদের সঙ্গে গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ।

মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

আজ বুধবার রমনা থানার উপপরিদর্শক আবুল খায়েরের দায়ের করা এ মামলায় যে ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ২ জন দাবি করেছেন যে, তারা সে সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না।

দেশে চলমান নারীর ওপর সহিংসতা, ধর্ষণের প্রতিবাদে গতকাল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্লাটফর্ম সদস্যরা।

এ ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়, মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বিক্ষোভকারীদের ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেওয়া হয়। তাদের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার অনুরোধ করা হলে তারা উল্টো পুলিশের ওপর চড়াও হয় এবং পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা করে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। হামলায় রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ অন্তত ৭ পুলিশ সদস্য আহত হন।

মামলার ৪ নম্বর আসামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক আরমানুল হক এবং ৭ নম্বর আসামি ছাত্র ফেডারেশনেরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড সে সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে দাবি করেছেন।

আরমান সে সময় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় ছিলেন বলে দাবি করেছেন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে উত্তরের জেলাগুলোতে সাংগঠনিক কাজে আছি। ঢাকা থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে থেকেও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।'

'ফ্যাসিবাদী আমলে পুলিশ যে রকম বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিতো, আজকের মামলায় আমরা সেটার ধারাবাহিকতা দেখেছি,' বলেন তিনি।

অপরদিকে রিচার্ড ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ঘটনার সময় ধানমন্ডি এলাকায় ছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে।'

সংঘর্ষের সময় আরমান ও রিচার্ড না থাকলেও মামলায় তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে কেন, জানতে চাইলে মামলার বাদী এসআই খায়ের দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হামলার ঘটনার তথ্য সংগ্রহের পর আমরা মামলা দায়ের করেছি। যদি কোনো ভুল থাকে, তাহলে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তের সময় সংশোধন করবেন।'

সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবি সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্য

গতকাল বিকেলে 'ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ' নামে প্ল্যাটফর্মের প্রায় ৬০-৭০ জনের একটি দল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে পদযাত্রার চেষ্টা করে। পুলিশ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তাজনিত কারণে পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা দেয়। সে সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগোনোর চেষ্টা করে।

পুলিশ পবিত্র রমজানে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিক্ষোভকারীদের বারবার শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানায়। কিন্তু তারা পুলিশের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। তাদের অতর্কিত হামলায় ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী কমিশনার গুরুতর আহত হন। এছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা বিভাগের উপকমিশনারসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।

ঘটনার ভিডিও চিত্র দেখলে পরিষ্কার হয় যে, উত্তেজিত মিছিলকারীরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করার পর পুলিশ তাদের প্রতিহত করে। কিন্তু প্রকাশিত ছবিতে এ সত্যটি আড়াল করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে এ রকম খণ্ডিত সংবাদ ও ছবি প্রকাশ কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

Comments

The Daily Star  | English

Record toll collection on Padma and Jamuna bridges

Padma Bridge generated a record toll revenue of Tk 54.32 crore, while Jamuna Tk 41.81 crore

2h ago