‘ছেলেকে রেখে কীভাবে বাড়ি ফিরব, ওর মাকে কী জবাব দেব’

অর্ণব কুমার সরকার। ছবি: সংগৃহীত

'আমার ছেলেকে কেউ গুলি করতে পারে এটা আমি কল্পনাও করতে পারি না। অনেক সংগ্রাম করে ওকে বড় করেছি,'  কথাগুলো বলছিলেন অর্ণবের বাবা নিতীশ কুমার সরকার।

গতকাল বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সময় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসনের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার সরকার (২৮)।

আজ শনিবার দুপুর ২টার দিকে গল্লামারি মহাশ্মশানে সৎকার করা হয় অর্ণবকে।

'ছেলেকে এখানে রেখে কীভাবে বাড়ি ফিরব, ওর মাকে কী জবাব দেব,' বিলাপ করছিলেন অর্ণবের বাবা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর শিক্ষার্থী অর্ণব এর আগে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে লেখাপড়া করেছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার কনস্ট্রাকশন ব্যবসাও দেখাশোনা করতেন।

পরিবার থেকে জানা যায়, পড়ালেখা শেষ করে উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল অর্ণবের। অন্যদিকে বিয়ের জন্য পরিবার থেকে পাত্রী খোঁজা হচ্ছিল।

'কিন্তু গতরাতে দুর্বৃত্তের গুলিতে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে,' বলছিলেন নিতীশ কুমার।

অর্ণবের ছোটভাই অনিকের আজ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। আজ যখন সবাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে গেছেন তখন বড় ভাইয়ের সৎকারে গল্লামারি মহাশ্মশানে অনিক।

নিতীশ কুমার বলেন, 'আমার বড় ভাইয়ের ছেলে মালয়েশিয়াতে থাকেন। অর্ণবের ইচ্ছা ছিল সেও লেখাপড়া করতে বিদেশে যাবে। আমি অবশ্য ওর বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছিলাম।'

অর্ণবের কাকা তুষার কুমার বলেন, 'কোনোভাবেই হিসাব মেলাতে পারছি না কেন ওকে গুলি করে মারল। অর্ণবের কোনো খারাপ সঙ্গ নাই, কোনো ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব নাই, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে কোনো মারামারি নাই, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নাই তাহলে কেন তাকে মারবে?'

তিনি বলেন, 'এটি ভুল করে হওয়া কোনো হত্যা নয়, কয়েকটা গুলি করেছে তার মাথায়-পায়ে, তারপর তাকে কুপিয়ে মেরেছে।'

গতকাল নগরীর তেঁতুলতলার কাছে রাত ৯টার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন অর্ণব। তখন কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে এসে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে এবং পরবর্তীতে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা অর্ণবকে উদ্ধার করে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খুলনা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, 'যেহেতু এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো "ক্লু" পাওয়া যায়নি তাই আমরা একাধিক লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করব। ইতোমধ্যে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের  জন্য আনা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Power subsidies may rise 83% this fiscal year

Subsidies for the power sector are likely to balloon 83 percent this fiscal year as the interim government is planning to clear all arrears owed to private power producers.

10h ago