বাড়ির উঠানে ৪ খাটিয়া, ছোট্ট ফাহিমের কেউ রইলো না

সাভারে সড়ক দুর্ঘটনায় তার বাবা-মা-ভাই ও খালা নিহত হয়েছেন।
ফাহিম সিদ্দিকী | ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ভবনদত্ত গ্রামে স্কুলশিক্ষক ফারুক সিদ্দিকীর বাড়ির সামনে সকাল থেকে স্বজন ও গ্রামবাসীর ভিড়। থামছে না কান্না।

বাড়ির উঠানে রাখা হয়েছে চারটি খাটিয়া। চলছে দাফনের প্রস্তুতি। ১০ বছর বয়সী শিশু ফাহিমকে সন্ধ্যার পর জানানো হয়েছে তার বাবা-মা, ভাই ও খালা কেউ বেঁচে নেই। সড়ক দুর্ঘটনায় ঝরে গেছে তাদের প্রাণ।

ছবি: সংগৃহীত

আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সাভার উপজেলার ফুলবাড়িয়া পুলিশ টাউন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ভবনদত্ত গ্রামের বাসিন্দা ফারুক হোসেন সিদ্দিকী (৫০), তার স্ত্রী মহসিনা সিদ্দিকী (৩৮) ও ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী (১৪) এবং মহসিনার বড় বোন সীমা আক্তার (৪০)।

ফারুক হোসেন সিদ্দিকী, তার স্ত্রী মহসিনা সিদ্দিকী ও ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী এবং মহসিনার বড় বোন সীমা আক্তার (বাম থেকে) | ছবি: সংগৃহীত

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে একটি অ্যাম্বুলেন্স সড়কের ডিভাইডারে ধাক্কা লেগে থেমে গেলে পেছন থেকে আসা একটি বাস তাতে ধাক্কা দেয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সের সিলিন্ডারের গ্যাসে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। পরে আগুন লাগা বাসটিতে পেছন থেকে আরেকটি বাস ধাক্কা দেয়। এতে সেই বাসটিতেও আগুন লেগে যায়।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে অ্যাম্বুলেন্সসহ তিনটি যানবাহন পুরোপুরি পুড়ে যায়। অ্যাম্বুলেন্সে থাকা চারজনের মৃত্যু হয়। আহত হন বাসের সাতজন যাত্রী।

ফারুকের ছোট ভাই মামুন সিদ্দিকী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তার ভাই ভবনদত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

'আমার ভাইয়ের ছোট ছেলে ফাহিম সিদ্দিকী পাশের উপজেলা গোপালপুরের এক আবাসিক মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে। লোক পাঠিয়ে দুপুরে তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। সন্ধ্যার পরে জানিয়েছি, তার বাবা-মা, ভাই ও খালা কেউ বেঁচে নেই,' বলেন মামুন।

আইন প্রক্রিয়া শেষে চারজনের মরদেহ নেওয়া হচ্ছে ভবনদত্ত গ্রামে।

মামুন আরও জানান, ফারুকের বড় ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকী স্থানীয় ভবনদত্ত গণ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার চিকিৎসার জন্য গত রাতে তারা ঘাটাইল উপজেলার হামিদপুর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল আমীন হেপলু জানান, রাতে তিনি ফারুক ও তার পরিবারের সদস্যদের অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে বাড়ি ফেরেন। সকালে তাদের মৃত্যু সংবাদ পান।

'ছোট্ট ফাহিমের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না,' বলেন রুহুল।

ফারুকের চাচাতো ভাই শহীদুল ইসলাম রুমি বলেন, 'দেশের বিপজ্জনক সড়কে দুর্ঘটনার বলি হলো আমাদের পরিবার। সবার শরীর পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Mohammadpur alarmed over muggings even in daylight

On Saturday, a 17-year-old college student was mugged near Dhaka State College on Nurjahan Road around 4:15 pm

12m ago