সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ বাকস্বাধীনতা খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে: টিআইবি

টিআইবি

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪ নিয়ে নিজেদের পর্যবেক্ষণে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, এই অধ্যাদেশ নাগরিকের বাকস্বাধীনতা, ভিন্নমত ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সংগঠনের অধিকার খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।

এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি বলেছে, এ অধ্যাদেশে অনেকাংশে পূর্বতন কালো আইনসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিমূলক বৈশিষ্ট্য রয়ে গেছে। টিআইবি মনে করে, তড়িঘড়ি করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে যথাযথ পর্যালোচনার সুযোগ না দিয়ে এ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪ নিয়ে টিআইবি আজ এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশের কথা তুলে ধরে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'অধ্যাদেশটি পর্যালোচনা করে আমরা দেখছি, এতে অনেকাংশে পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের এজেন্ডা ও ভাষ্যেরই প্রতিফলন ঘটেছে; একাধিক ধারায় পূর্বের ডিএসএ বা সিএসএ-এর পুনরাবৃত্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অধ্যাদেশ জনগণের বাক, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্ত গণমাধ্যম এবং সংগঠনের অধিকারকে খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। যদিও বলা হয়েছে, নতুন অধ্যাদেশটি হবে দেশবাসীর ডিজিটাল অধিকার নিশ্চিতে সহায়ক, কিন্তু বাস্তবে এতে আমরা অনেকটাই পূর্বতন কালো আইনগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিমূলক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকতে দেখছি। অধ্যাদেশে অনেক জটিল ও অস্পষ্ট শব্দ, শব্দগুচ্ছ ও ধারণার ব্যবহার করে এর অপব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক ক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত করে একটি জগাখিচুড়ি পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।

অধ্যাদেশটির খসড়া প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত না নেওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, 'যথাযথ পর্যালোচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে তড়িঘড়ি করেই অধ্যাদেশটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী চেতনায় গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে এমন প্রক্রিয়ায় এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিমূলক অধ্যাদেশ অনুমোদন পাওয়া বিব্রতকর।'

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, 'অধ্যাদেশ অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য, যদিও ধর্মীয় অনুভূতির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। তদুপরি, ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত যেমন অগ্রহণযোগ্য, একইভাবে সকলের সমঅধিকার, অসাম্প্রদায়িক এবং বৈষম্যবিরোধী মূল্যবোধের উপর আঘাতও একই মাত্রায় অগ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত। এ ধরনের ধারা যদি সংযুক্ত করতেই হয়, তাহলে ধর্মীয় মূল্যবোধে সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না। সকল মানুষের সমান অধিকার, অসাম্প্রদায়িকতা এবং সার্বিকভাবে বৈষম্যহীন মূল্যবোধের প্রতি আঘাত আনে এমন মন্তব্যও সমানভাবে অগ্রহণযোগ্য হবে, এমন ধারা সন্নিবেশ করতে হবে। আমরা মনে করি, অধ্যাদেশটি বর্তমান অবস্থায় জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করবে না।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh RMG sector

RMG sector on edge as tariff talks make no headway

The diverging outcomes threaten to create a multi-tiered tariff landscape in Asia, placing nations like Bangladesh at a serious disadvantage in the US market.

12h ago