রাজনৈতিক-আমলাতান্ত্রিক প্রভাবের বাইরে থেকে দুদক গঠনের আহ্বান টিআইবির

ছবি: সংগৃহীত

দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনা ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবের চর্চা থেকে বেরিয়ে এসে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন কমিশন নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

গত ২৯ অক্টোবর দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের শতাধিক সাবেক মন্ত্রী-সংসদ সদস্য এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে অনুসন্ধানের কাজ চলমান রয়েছে। এমন একটি সময়ে শীর্ষ পর্যায়ে শূন্যতা দুদকের তদন্তসহ সব কার্যক্রমে ধীর গতি ও এমনকি স্থবিরতা সৃষ্টি করবে। কেননা নতুন কমিশন গঠনের আগ পর্যন্ত নতুন করে কারো বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু ও তদন্ত বা মামলার সুযোগ থাকবে না। ফলে দ্রুত নতুন কমিশন গঠনের মাধ্যমে এ শূন্যতা পূরণ করা জরুরি। অন্যথায়, রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।'

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, '২০০৪ সালে দুদকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আমরা সংস্থাটিকে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক বিবেচনায় নিয়োগ এবং রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক স্বার্থরক্ষায় ব্যবহারের হাতিয়ার হিসেবে দেখে আসছি। কর্তৃত্ববাদী সরকারের সময় কমিশনের নেতৃত্বের রাজনৈতিক আজ্ঞাবহ চরিত্রের দৃষ্টিকটু দৃষ্টান্তও রয়েছে। রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়ার কারণে কমিশন কখনোই প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে পারেনি, আগ্রহীও হয়নি। একই কারণে নিয়োগ পাওয়া কমিশনাররা সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা করণীয় নির্ধারণেও ক্ষমতায় থাকা বা ক্ষমতার বাইরে থাকার মানদণ্ডে প্রভাবিত। অনেক ক্ষেত্রে বড় আকারের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের তথ্য ও সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকা স্বত্ত্বেও তদন্তের উদ্যোগ না নেওয়া, আবার দায়সারা উদ্যোগ নিলেও পরবর্তীতে অভিযুক্তকে দায়মুক্তি দেওয়ার অশুভ নজিরও তৈরি করেছে দুদক। অন্যদিকে, ক্ষমতার বাইরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা অন্য কোনো কারণে বিরাগভাজন মহলের জন্য হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে নিজেকে ব্যবহার হতে দিয়েছে দুদক। ফলে বাস্তবে প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতি দমনের স্থলে দুর্নীতি সহায়ক ও সুরক্ষাকারী হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।'

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'আমরা মনে করি, দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো অবস্থায়ই দলীয় রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না। একইসঙ্গে, দুর্নীতি দমনে দক্ষ-উপযুক্ত, ব্যক্তিজীবনে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, আমলাতান্ত্রিক স্বার্থমুক্ত এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিদের কমিশনার হিসেবে নিয়োগের আহ্বান জানাই। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে নজিরবিহীন ত্যাগের বিনিময়ে সৃষ্ট জনপ্রত্যাশা যেমন আরও একবার ধূলিসাৎ হবে, তেমনি অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।'

Comments

The Daily Star  | English

No clear roadmap for investment

The budget for FY26 has drawn strong criticism from business leaders who say it lacks a clear roadmap for improving the investment climate, bolstering industrial competitiveness, and implementing overdue reforms in the banking sector.

14h ago