নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের গাড়িতে ‘হামলা’
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বহন করা একটি গাড়িতে হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
এতে আহত হয়েছেন দুজন। ধারালো অস্ত্রের মুখে গাড়িতে থাকা ছাত্রনেতাদের মোবাইল ও মানিব্যাগ লুট করা হয়েছে।
বান্দরবানের লামা যাওয়ার পথে সোমবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার মোগরাপাড়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান হাসনাত।
এদিকে গাড়িটি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহেদ মোর্শেদ বলেন, 'শীতের রাতে কুয়াশা থাকায় ছাত্রনেতাদের বহন করা মাইক্রোবাসটি ধীরগতিতে চলছিল। এ সময় একদল ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র হাতে গাড়িটি থামিয়ে গাড়ির কাচ ভেঙে ছাত্রনেতাদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ লুট করে। গাড়ির কাচ ভাঙায় দুজন ছাত্রনেতা আঘাত পেয়েছেন।'
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রনেতাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে এবং পরে অন্য গাড়ি আসলে ছাত্রনেতাদের কয়েকজন ঢাকায় এবং বাকিরা লামার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, 'ঘটনার ধরন ও বিবরণে ঘটনাটি ছিনতাইকারীদের কোনো দল ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছি। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে সোনারগাঁ থানা পুলিশ কাজ করছে।'
গাড়িটিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, মাহমুদা সুলতানা রিমি, রাকিব মোহাম্মদ, মুঈনুল ইসলাম, ইব্রাহিম নিরব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন মিতু ও ছাত্রনেতা মিশু আলী সুহাস ছিলেন বলে জানা গেছে।
তাদের মধ্যে মাহমুদা সুলতানা রিমি ও রাকিব মোহাম্মদ আহত হয়েছেন।
সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সোমবার বান্দরবানের লামা উপজেলায় একটি স্মরণসভা ও মতবিনিময়ে অংশ নেওয়ার কথা। সে উদ্দেশ্যেই রোববার দিবাগত রাতে একটি গাড়িতে করে আট সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকা ছাড়েন।
গাড়িতে থাকা রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, 'গাড়িতে আমরা আট জন ছিলাম। গাড়িটি যানজটের কারণে থেমে থেমে চলছিল। এরই মধ্যে চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে কাপড়ে মুখঢাকা একদল লোক এসে গাড়ির কাঁচ ভেঙে চালকের গলায় চাপাতি ধরে। হামলাকারীরা তখন গাড়িটির চারপাশ ঘিরে ফেলে। তারা চাপাতিসহ হাতে থাকা অস্ত্রের আঘাতে পুরো গাড়িটির কাঁচ ভেঙে আমাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা, ব্যাগ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি কেড়ে নেয়। একদল হামলাকারী তখন আরিফ সোহেল ভাইকে টেনে হিঁচড়ে গাড়ির বাইরে নেয়ার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে কোনো কারণে হামলাকারীরা দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা এসে উপস্থিত হয়।'
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, 'গাড়িটি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছিল। পাশেই আমাদের একটি টহল টিম ছিল। তাৎক্ষণিক আমাদের টহল টিমটি এগিয়ে গেলে ছিনতাইকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। আমরা ছিনতাইকারীদের ধরতে তৎপরতা শুরু করেছি।'
Comments