দেশে ঢালাও মামলার প্রবণতা বিব্রতকর: আইন উপদেষ্টা
দেশে ঢালাও মামলার প্রবণতা দেখা দিয়েছে, যা বিব্রতকর বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি সামাল দিয়ে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। এর আগে বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ওই বৈঠক চলে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, 'আলোচনায় কমিশনের কাজের অগ্রগতি কতটুকু—সেটি জানতে চেয়েছি। উনারা আমাকে অবগত করেছেন। উনারা যেভাবে কাজ এগোচ্ছেন, আমি খুবই আশাবাদী হয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, কমিশন যে রকম একটি বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন বা স্বপ্ন দেখছেন, এটা যদি সত্যিই করা যেত তাহলে সম্ভবত আমাদের বিচারঙ্গনে সমস্যা যা আছে তা থাকতো না কখনো। আমাদের এখানে আইনের শাসন, মানবাধিকার, মানুষের অধিকার অনেক বেশি শক্ত হতো। উনারা কিছু সমস্যার কথাও বলেছেন। আমরা উনাদের যথেষ্ট সাপোর্ট (সহায়তা) দিতে পারছি না। বিশেষ করে লজিস্টিক সাপোর্টের প্রবলেম আছে এবং এগুলো সত্ত্বেও উনারা এত কষ্ট করে কাজ করছেন, এ জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি।'
দুটি ব্যাপারে কমিশনে কাছে নির্দিষ্টভাবে সহায়তা চেয়েছেন জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, 'বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গায়েবি মামলা হতো। সরকারের পক্ষ থেকে গায়েবি মামলা দিতো। আর এখন আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা দিচ্ছি না। সাধারণ লোকজন, ভুক্তভোগী লোকজন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, তারা অন্যদের ব্যাপারে ঢালাও মামলা দিচ্ছে। ঢালাও মামলার একটা খুব মারাত্মক প্রকোপ দেশে দেখা দিয়েছে, এটি আমাদের অত্যন্ত বিব্রত করে। আমরা অনেক ধরনের আইনি সংস্কারের কথা ভাবছি। আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছি। উনাদের অনুরোধ করেছি, বাংলাদেশে বিচার অঙ্গনের যারা আছেন, তাদের কাছে আমাদের একটা প্রত্যাশা আইনগতভাবে কীভাবে বিষয়টি সামাল দেওয়া যায়—পরামর্শ নিতে এসেছি। ওনারা পরামর্শ দেবেন, কাজ করে, রিসার্চ (গবেষণা) করে জানাবেন।'
'আরেকটি বিষয় হলো পরবর্তী সময়ে উচ্চ আদালতে যে বিচারক নিয়োগ হবে, সেটি আমরা একটা আইনের মাধ্যমে করতে চাচ্ছি। আইনের মাধ্যমে করার দাবি সমাজে বহুদিন যাবৎ আছে। ২০০৮ সালে এ রকম একটা আইন হয়েছিল। পরে তা আইনে রূপান্তরিত হয়নি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার এসে ওটাকে আইনে রূপান্তরিত করেনি। ওই আইনটা আরও বেশি যুগোপযোগী করার জন্য ওনাদের (বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সহায়তা চেয়েছি, যাতে নেক্সটে যে নিয়োগ হবে সেটি যাতে আমরা আইনের মধ্য দিয়ে করতে পারি,' যোগ করেন তিনি।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর আট সদস্যের 'বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন' গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
Comments